আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৭:৫৬ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়’র (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। রঙ্গভূমি নামে একটি সংগঠন ক্যাম্পাসে পথনাট্য প্রদর্শন করে। এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলারও অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,‘আমরা আজকে শুধু আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে আসিনি। গত ১৯ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে আমরা কোনটিরই পূর্নাঙ্গ বিচার পাইনি।প্রতিবারই আমরা রাস্তায় নেমেছি কিন্তু তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গেছে।সরকার সব সময় সন্ত্রাসীদের বাঁচিয়ে দিয়েছে।বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের আমরা তাই দেখেছি।এদেশের সংবিধান আমাকে কথা বলার অধিকার দিয়েছে।যারা আমাদের এই অধিকার কেড়ে নিতে চায় তাদের রুখে দিতে হবে। ১৯৫২ সালে আমরা ভাষার জন্য আন্দোলন করেছি, ২০১৯ সালে এসে আজকে আমাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে।আমরা দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলছি,আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে চাওয়ার পরিণাম ভালো হবে না।’
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ক্যাম্পাস।‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘হলে হলে সন্ত্রাস, রুখ দাঁড়াও ছাত্র সমাজ’, ‘দিয়েছি রক্ত, আরও দেবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’ এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান উচ্চারণ করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের নটরডেমিয়ান সোসাইটি অব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে। এসময় তারা সাবেক নটরডেম শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন। মানববন্ধনে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্লে-কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নুর মোহাম্মদের উপস্থাপনায় এতে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
এসময় বক্তব্যে বলেন,‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যদি কোন শিক্ষার্থী অপর শিক্ষার্থীকে থাপ্পড়ও দেয়, অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আজকের ঘটনা নিয়েও যদি কেউ অভিযোগ দেয়, তদন্ত সাপেক্ষে আমরা এর বিচার করব।বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ক্ষমতা প্রদর্শনের জায়গা নয়।’
এর আগে সকাল ৯টায় বিক্ষোভ মিছিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলের শেষে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছন থেকে ধাওয়া করলে ছাত্রদল কর্মীরা পালিয়ে যায়। এ সময় ৫ জন আহত হন। শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাস আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমরা ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসবো।এতে কেউ বাধা দিলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মারামারি হচ্ছিলো আমরা গিয়ে দুইজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।তাদের আটক করা হয়নি তারা আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আমরা যাচাই-বাচাই করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিব।’
দুপুরে আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও পথনাট্য ‘অবয়ব’ প্রদর্শন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রঙ্গভূমি।
এমএস/কেআই