আন্তর্জাতিক ‘মৃত্যুদন্ড বিরোধী দিবস’ আজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ১০ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
মৃত্যু একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জন্ম নিলে মরতে হবেই। কিন্তু মৃত্যুদন্ড মানব সৃষ্ট এক নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অধঃপতিত শাস্তি। তথাপি মৃত্যুদন্ডাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন। বর্তমান বিশ্বের অর্ধশতকেরও বেশি রাষ্ট্রে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রাষ্ট্র কর্তৃক সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান হিসেবে মৃত্যুদন্ডাদেশের আইন বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই বিরাজমান। ১৯৪৮ সালে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর মাত্র ৮টি দেশ অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের বিধানকে বাতিল করা হয়।
১৯৭৭ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬ তে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৪০টি দেশ সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান হিসেবে মৃত্যুদন্ডের আদেশকে বাতিল করে যা বিশ্বের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ দেশের সমপরিমাণ। তবে এ দেশগুলোর মধ্যে কেবল ১০২টি দেশ সকল প্রকার অপরাধের ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ডের আইনকে বাতিল ঘোষণা করেছে।
মৃত্যুদন্ডের শাস্তি মানেই রাষ্ট্র কর্তৃক একজন নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা। এটি সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের দুটি বিধানকে সরাসরি লঙ্ঘন করে। প্রথমটি হল, জীবন ধারণের অধিকার এবং দ্বিতীয়টি, অত্যাচার থেকে মুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার অধিকার।
মৃত্যুদন্ড নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক প্রণীত সনদ ৬২/১৪৯ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০০৮ সালে এ সনদটি প্রয়োগ করা হয়। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মৃত্যুদন্ডের শাস্তির ওপর স্থগিতাদেশ দিতে অনুরোধ করা হয় যা এ শাস্তির বিলুপ্তির লক্ষ্যেই পরিচালিত হয়েছিল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার সনদের ২(২) ধারা মোতাবেক সকল প্রকার মৃত্যুদন্ডাদেশের বিরুদ্ধে ইইউ রাষ্ট্রগুলো অবস্থান নেয়।
২০০৭ সালের ডিসেম্বরে কাউন্সিল অব ইইউ ‘European Day Against Death Penalty’ প্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়। যা ২০০৮ সালের ১০ অক্টোবর থেকে পালিত হয়ে আসছে। ‘World Coalition against Death Penalty’ কর্তৃক একই বছর থেকে একই দিনে ‘আন্তর্জাতিক মৃত্যুদন্ডাদেশ বিরোধী দিবস’ পালন শুরু হয়।
এসএ/