বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময়:মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার
বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ.শহীদুল ইসলামের সঙ্গে চাইনিজ চেম্বার'স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার জহুর বারুতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে চাইনিজ চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ল কোয়েক শিন বলেন, বাংলাদেশ এক সময় পরাধীন ছিল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে আজ বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময় বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের ক্ষতি কাটিয়ে দেশটি এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পথে।বাংলাদেশে এখন অনেক কাজ হচ্ছে এবং একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক বাজার। সেখানে বিনিয়োগ করার অনেক সুযোগ আছে এবং আমাদের ব্যবসায়ীরা খুবই আগ্রহী।
হাইকমিশনার মহ.শহীদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়।তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।স্বাবলম্বী হবার পথ বিশ্বকে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে এশিয়ার একমাত্র দ্রুত অর্থনীতির দেশ, নিজ সামর্থে ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তিতে সাফল্য এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বিশ্বে এখন অনুকরণীয়।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে এবং মাথাপিছু আয় ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে সরকার।
হাই-কমিশনার বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে সরকার বেশ কিছু সাফল্য দেখিয়েছে। যেমন-সন্ত্রাস দমন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন, বিদেশি বিনিয়োগে শতভাগ সুরক্ষা প্রদান, নিয়মিত ইকনোমিক জোনের পাশাপাশি একশটি স্পেশ্যাল ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগের সুযোগ। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ঔষুধ, সিরামিক, পোশাক, চাল, মাছ, ফুল এবং সবজি বিশ্বে রফতানি হচ্ছে।
তিনি বলেন, উৎপাদকরা বাংলাদেশ থেকে বিশ্বে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি পণ্য রফতানি করতে পারে। সর্বোপরি রয়েছে কর্মঠ নাগরিক এবং তুলনামূলক কম শ্রমমূল্যের দক্ষ কর্মী।এসব বিবেচনায় নিয়ে চাইনিজ চেম্বারের সদস্যদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান।
আরও সম্ভাবনার কথা জানতে শোকেস বাংলাদেশ করার জন্য চেম্বারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চাইনিজ চেম্বার সহযোগিতার প্রস্তাব দেন। উভয় পক্ষের আলোচনায় আগামী নভেম্বরের শেষে জহুর বারুতে শোকেস বাংলাদেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চেম্বারের প্রেসিডেন্ট শিন বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে চাই, এজন্য শোকেস বাংলাদেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ সফর করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় হাইকমিশনার জহুর চাইনিজ চেম্বারকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী সেমিনারে বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, এক্সপার্ট তথা বিশেষজ্ঞ এবং বিজনেস নেতারা অংশ নেবে। সেখানে আলোচনা, শো, বিজনেস-টু-বিজনেস মিটিং এবং পণ্যের প্রদর্শনী করা হবে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ও চাইনিজ চেম্বার মিলে কাজ করার ঘোষণা দেন। চাইনিজ চেম্বারের ডেপুটি চেয়ারম্যান হেং এম এস, ডেপুটি চেয়ারম্যান ইউজিনি সাউ ইয়ে সিন, সেক্রেটারি জেনারেল গোহ লাই চাই এবং অন্যান্য সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।
সভায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (লেবার ২) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান, প্রথম সচিব (পলিটিক্যাল) রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
আই/কেআই