বাবা-মায়ের মৃত্যুতে হুমকির মুখে ৩ শিশুর জীবন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:১৪ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার
সুনামগঞ্জের ছাতকে যাত্রীবাহী লেগুনা খালে পড়ে আহত হাসিনা বেগম (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বাউভোগলী গ্রামের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। এর আগে একই দুর্ঘটনায় তার স্বামী মখজ্জুল আলীর (৫১) মৃত্যু হয়।
গত ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বুড়াগাঁও-আলাপুর গ্রামের মধ্যখানে সদরপুর এলাকায় যাত্রীবাহী লেগুনা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ওই লেগুনার যাত্রী, নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২ জন আহত হন।
মর্মান্তিক ওই সড়ক দুর্ঘটনায় তাদের তিন সন্তান সামছিয়া বেগম (৫), ফেরদৌসী বেগম (৩) ও ২১ মাস বয়সের শিশু পুত্র আমিনুর রহমান গুরুতর আহত হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিন শিশু বাড়িতে ফিরলেও মা-বাবার মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়েছে তারা। হুমকির মুখে পড়েছে তাদের জীবন।
তাদের মধ্যে দুই শিশুর কান্না থামলেও কান্না থামেনি ২১ মাস বয়সের শিশু পুত্র আমিনুর রহমানের। সে দুধ পানের জন্য তার মাকে খুঁজছে। তাদের বাড়িতে এখনো ভিড় করছে আত্মীয় স্বজন ও এলাকার লোকজন। অনেকেই অনাথ শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন।
স্বজনদের অভিযোগ, ফিটনেসবিহীন লেগুনা গাড়ী আর চালকের অদক্ষতার জন্য তিন শিশুকে এতিম হতে হয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের জীবন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনার তাৎক্ষণিক জয়কলস হাইওয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে লেগুনাটি উদ্ধার করলেও ঘাতক চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ছাতক উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাউভোগলী গ্রামের এনামুল হক বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একই পরিবারের তিন শিশুসহ পাঁচ সদস্যকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতেই মখজ্জুল আলী মারা যান।
তিনদিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসিনা ও তার সন্তানদের ভর্তি করা হয় জালালাবাদ রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসিনার অবস্থা অবনতি ঘটলে তাকে ইবনেসিনা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেল ৩টায় তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জয়কলস হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির (বদিরগাঁও) ইনচার্জ রনু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার দিনই লেগুনাটি উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির হেফাজতে রাখা হয়। ছাতক থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ঘাতক চালককে চিহ্নিত করাসহ গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, এ ঘটনায় নিহতের আত্মীয় হাফিজুর রহমান বাদি হয়ে মঙ্গলবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আই/