ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রী হয়রানি বন্ধে এমপির সাঁড়াশি অভিযান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:০৭ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর ও সর্ববৃহৎ স্থল প্রবেশ দ্বার বেনাপোল।এই আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার দেশি-বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন।যে কারণে এখানকার শ্রমিক থেকে শুরু করে কাস্টমস, বন্দর, বিজিবি, পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকদের নামে প্রতিনিয়ত পাসপোর্টযাত্রীদের হয়রানি ও বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোলে হু-হু করে গড়ে ওঠা প্রায় তিন শতাধিক বিভিন্ন এন্টারপ্রাইজ নামীয় পাসপোর্ট দালালদের দোকান, হুন্ডি-সোনা পাচারকারি ও ছিনতাইকারিদের মাধ্যমে পাসপোর্টযাত্রীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এখন থেকে বেনাপোল চেকপোস্টে পাসপোর্টযাত্রী হয়রানি করতে দেওয়া হবে না। থাকবে না কোন এন্টারপ্রাইজ নামের পাসপোর্ট দালাল কোম্পানী।বন্ধ করতে হবে হুন্ডি ও সোনা পাচার। সেজন্য যা কিছু করার সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সম্প্রতি বেনাপোল চেকপোস্টের সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে এক সাড়াশি অভিযানে যশোর-১ (শার্শা) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন চেকপোস্টে সকলের এ ব্যাপারে সজাগ থাকার আহবান জানান।

তিনি ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারী পাসপোর্টযাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন। তিনি কথা বলেন চেকপোস্ট কাস্টমস, বন্দর, ইমিগ্রেশন ও বিজিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে। সেই সাথে বেনাপোলের সকল পরিবহন কাউন্টারের কর্মকর্তা, এন্টারপ্রাইজ ও স্টোর নামীয় পাসপোর্ট দালাল, হুন্ডি পাচারকারি, ধুড় (নারী-শিশু) পাচারকারি ও চেকপোস্টে কর্মরত লেবারদের সতর্ক করে দেন। পরে, পুলিশ ও স্থানীয়
সুত্রে খবর পেয়ে বেনাপোল চেকপোস্টে অবৈধ পন্থায় প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন এন্টারপ্রাইজ ও স্টোর নামে যে সকল দোকানদাররা পাসপোর্টযাত্রীদের হয়রানি, নারী-শিশু পাচার ও হুন্ডি পাচারের সাথে জড়িত তাদের দোকানে অভিযান চালান। হুশিয়ারী দেন।

তিনি বলেন, পাসপোর্টযাত্রী হয়রানি বন্ধে এ সকল অবৈধ এন্টারপ্রাইজ বা স্টোর বন্ধ করতে হবে। এ এলাকায় কোন দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় নেই। নিজে উপস্থিত থেকে বন্ধ করে দেন কয়েকটি অবৈধ ব্যবসার দোকান। সে সময়ে অধিকাংশ এন্টারপ্রাইজের মালিকরা দোকান ঘর বন্ধ করে পালিয়ে গেলে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বেনাপোল চেকপোষ্টের সকল আগাছা দূর করা
হবে। শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। উপড়ে ফেলা হবে সকল দুর্নীতির শিকড়। আগামীতে ভোট দিবেন কি না তা পরের ব্যাপার। তাই বলে কোন অবস্থাতেই আন্তর্জাতিক বেনাপোল চেকপোস্টের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দেব না। 

জননেত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান আর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। অভিযানে এমপি শেখ আফিল উদ্দিন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে পাসপোর্টযাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া ব্যতিরেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করারও আহবান ব্যক্ত করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শার্শার নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান, বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল, বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান, ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিন পাঠানসহ পুলিশ ও প্রশানের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কর্মকর্তা।

অভিযানে সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আসিফ-উদ-দৌলা অলোক, বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অহিদুজ্জামান অহিদ, সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান প্রমুখ। এসময় এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের এই সাড়াশি অভিযানকে স্বাগত জানান স্থানীয় সুধী সমাজের মানুষেরা। 
কেআই/