ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

একঝাঁক মেধাবীর অনিশ্চিত জীবন

আজাদুল ইসলাম আদনান

প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০১:৩৪ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার

দেশের সর্বত্র এখন আলোচনার শীর্ষে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ড। যে ছেলেটি বাবা-মায়ের কোল ছেড়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য অচেনা শহরে এসে বসতি স্থাপন করেছিলো, তাকে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে। যারা তাকে হত্যা করেছে তারাও কোন না কোন মায়ের মেধাবী সন্তান। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধার খেলা চলে, সেখানে ছাত্ররাজনীতির বলি হতে হয়েছে মেধাবী এ ছেলেটির। আর যারা তাকে হত্যা করেছে তারাও প্রত্যেকে মেধাবী শিক্ষার্থী। যখন তাদের পড়ার টেবিলে থাকার কথা ঠিক তখন হাতকড়া হাতে দিয়ে যেতে হয়েছে কারাগারে। ফলে নিহত আবরার সহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলোরও স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটেছে।

এ অবস্থায় দেশব্যাপী প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে। হত্যকাণ্ডের পরদিন থেকেই বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল বুয়েটসহ দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

দেশের প্রায় প্রত্যেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্ররাজনীতির দৌরাত্ম্য নতুন কিছু নয়। এর আগেও প্রতিটি সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের দ্বারা অন্য শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আবরারের বাবা ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে হত্যকাণ্ডে জড়িত ১৮ জনকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। যারা বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড ভোগ করছেন।

আবরারে পর নতুন করে যাতে অন্য কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাণ দিতে না হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১০ দফা দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকে বসেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। যেখানে দফাগুলোর প্রত্যেকটি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মো. সাইফুল ইসলাম।

বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পাশাপাশি আবরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে গোটা দেশের ছাত্র সমাজ ও সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি অনেকেই দাবি তুলেছেন, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আপাতোত দলীয় ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা হোক।

বুয়েট ছাত্রের হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবার যেমন ভেঙে পড়েছে, ঠিক একইভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও বহিষ্কৃত ১৯ আসামির পরিবারের স্বপ্নও মরিচিকায় রূপ নিয়েছে। তছনছ হয়ে গেছে প্রতিটি পরিবারের আশার আলো। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাবা-মা, স্বজনদের স্বপ্ন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে দোষী হিসেবে আটক মো. আকাশ হোসেন। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। তার বাবা আতিকুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। বাড়ি উত্তরের জেলা জয়পুরহাটে।

সন্তান মেধাবী হওয়ায় নিজের মত ভ্যানচালক না বানিয়ে জীবনের সবকিছু দিয়ে পাহাড়সম স্বপ্ন নিয়ে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কখনো হার মানেননি। সন্তানও এক সময় বুঝতো বাবার পরিশ্রমের মানে। তার প্রতিদানও রেখেছিলেন আকাশ।  

এসএসসি ও এইচএসসি’তে গোল্ডেন-৫ পেয়েছিল সে। স্বপ্নটাকে বাস্তবে রুপি দিতে সন্তানকে বুয়েট ভর্তি করাবেন। কিন্তু ছিলনা ভর্তির পর্যাপ্ত টাকা। নিজের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের টাকা ও প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় বুয়েটে ভর্তি করান সন্তানকে। আশা ছিল, সন্তান বড় হয়ে আতিকের সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু বুয়েটে পড়তে এসে ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। মাঝে পথে এসে স্বপ্নে যে ভাটা পড়বে তা জানা ছিলনা আতিকের।

সন্তান গ্রেফতার হওয়ায় হতাশায় নিমজ্জিত পরিবারটি এখন দুশ্চিন্তার বেড়াজালে আবদ্ধ। এসএসসি ও এইচএসসি’তে ভাল ফলাফল করায় যে এলাকাবাসী সুনাম করেছিল, এখন তারাই আবরার হত্যায় আকাশের সম্পৃক্ততায় লজ্জিত।

আবরার হত্যায় জড়িত আরেক আসামি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না। ১২ বছর আগে বাবা মারা গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর কাছে থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করে বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান মুন্না। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে মেধাবী। নিজের গ্রাম চুনারুঘাটের কৃতী সন্তান মেধাবী মুন্না আজ সহপাঠী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত।

আরেক আসামি ইফতি মোশাররফ সকাল বুয়েটের বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সকাল বুয়েট ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বিদ্যালয়ে পড়াকালে সকাল সব সময় মেধা তালিকায় থাকতেন।

রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের আটাশ কলোনি এলাকার এই মেধাবী ছেলেটি দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। বাবা মোকলেছুর রহমান ও মা রাবেয়া খাতুন জানান, তাদের সন্তান খুব মেধাবী। ছোটবেলা থেকে কারও সঙ্গে তেমন একটা মিশত না। পড়ালেখার পাশাপাশি গণিত অলিম্পিয়াড ও বিতর্কে অংশ নিত সকাল। সন্তানের এই পরিণতিতে নির্বাক ইফতির পরিবার।

আবরার হত্যার আরেকজন আসমি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল। ছোটবেলা থেকেই নম্র ও ভদ্র। রাসেল বুয়েটে আসার আগে কখনো ছাত্রলীগসহ কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও, চাকরির আশায়  ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত হোন বলে জানান রাসেলের মামাতো ভাই রনি।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরেক আসামি মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। তিনি বুয়েটে নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। জিয়ন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গাপুর ধলারপাড় গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

২০১৩ সালে মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে নটরডেমে ভর্তি হন। এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান তিনি। জিয়নের বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, তার তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে রংপুরের এমবিবিএস কোর্সে ইন্টার্নি করছেন আর ছোট মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী। তবে মেধাবী জিয়নই ছিল তার পরিবারের সবচেয়ে উচ্চাশার পাত্র।

আবরার হত্যায় জড়িত অন্য আসামি মুহতাসিম ফুয়াদ। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। ফুয়াদের বাবা সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোর থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ফুয়াদ চট্টগ্রাম বড় হন কিন্তু বুয়েটে আসার আগে কখনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে জানায় তার পরিবার।

মেহেদী হাসান রবিন। মামলার ৪ নং আসামি। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার কাটাখালিতে তার বাড়ি। বাবা মাকসুদ আলমের একমাত্র ছেলে হওয়ায় স্বপ্নটা ছিল আকাশ সমান। নিজে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সদস্য।

এলাকায় কোনো ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত না হলেও বছর খানেক আগে বুয়েটে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রবিন। কিন্তু রাজনীতিতে জড়াতে বারবার নিষেধ করা হয়েছিল বলে জানান রবিনের বাবা।

আবরার হত্যার ৩ নম্বর আসামি অনিক সরকার। বাবা আনোয়ার হোসেন সরকার এলাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। রয়েছে কাপড়সহ পেট্রোলপাম্প ও সারের ডিলারের ব্যবসা। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট অনিক। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে হতবাক অনিকের পরিবারও। এসএসসি পরীক্ষার পর থেকে অনিক ঢাকাতেই লেখাপড়া করছে। অনিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তা জানা ছিলনা তার পরিবারের সদস্যদের। সন্তানের এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক তার পরিবার।

অমিত সাহা বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। বাবা রঞ্জিত সাহা ধানের আড়তদার, মা গৃহিণী। বাড়ি নেত্রকোণা জেলা শহরের আখড়ামোড়ে। ছোটবেলা থেকেই অত্যান্ত মেধাবী অমিত পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছেন বৃত্তি।

জেলা শহরের আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও নেত্রকোনা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তার বাবা-মা বর্তমানে ভারতে আছেন বলে জানা গেছে। সেখানে তীর্থে গেছেন তারা। 

ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির আবরার হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভাঙাড়িপাড়ার মাহতাব আলীর ছেলে মনির। তিনি পানিসম্পদ বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

মামলার ৮ নম্বর আসামি মাজেদুল ইসলাম ম্যাটারিয়াল অ্যান্ড ম্যাটারলজিক্যাল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মামলার ৯ নম্বর আসামি মোজাহিদুর রহমান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। তিনি ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মামলার ১০ নম্বর আসামি তানভীর আহম্মেদ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ১১তম আসামি হোসেন মোহাম্মদ তোহা।

এদিকে, হত্যকাণ্ডে জড়িত আরেক এজহারভুক্ত আসামি মোয়াজ আবু হোরায়রাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গতকাল শনিবার গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তার পরিবারের সঙ্গে এ বিষয়ে এখনো যোগাযোগ হয়নি।   

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের অন্য আসামিরা হলেন, মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), মো. তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মো. জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মো. শাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মো. মোর্শেদ (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ)।

এজাহারে নাম না থাকা আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আলোচিত এ হত্যকাণ্ডের জন্য এককভাবে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে রাজি নন শিক্ষাবিদরা। তারা বলেন, নারকীয় হত্যাকাণ্ডের জন্য আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাও দায়ী। তাই অনেকে বুয়েটের মত দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানান। তারা বলছেন, অল্প সময়ের জন্য হলেও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখা উচিত।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বর্তমানে ছাত্ররাজনীতি আমাদের ভালকিছু দিচ্ছেনা। হানাহানানি, কাটাকাটি নৃশংসতা বেড়েই চলছে। অসুস্থ রাজনীতি গোটা শিক্ষাঙ্গনকে গ্রাস করে ফেলেছে। ছাত্ররাজনীতির নামে চলছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকার্ম।

বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত চর্চার জায়গা হলেও সেখানে ভিন্নমতকে কোনোভাবেই সহ্য করা হচ্ছেনা। ছাত্ররাজনীতির নামে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠোরোধ রোধ করা হচ্ছে। যা দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় বড় কলেজগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে।

গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্র সংগঠনের ক্ষমতা প্রদর্শনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে যে ধারা চলছে, তাতে ছাত্রসংগঠনগুলোকে মূল দলের অনুগত হতে হয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে ছাত্ররাজনীতিতে অব্যবস্থাপনা, দুর্বৃত্তপনা, টেন্ডারবাজি ও ক্ষমতাকে উপভোগ করার সব বিষয়ে চলে আসে। ক্ষমতা প্রদর্শন ছাত্ররাজনীতিকে নষ্ট করে দিয়েছে। চলমান ছাত্ররাজনীতিতে জনসেবার আদর্শ নেই। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

নজরুল ইসলাম বলেন, শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, শিক্ষকদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা রাজনীতি করবেন অবশ্যই কিন্তু দলীয় রাজনীতি করতে পারবেন না। তাদের আদর্শ হবে জনবান্ধব। শিক্ষার্থীদের জন্য ভালকিছু হবে এমন রাজনীতিই তারা করবেন এটাই জাতির প্রত্যাশা।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেমন সবধরণের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, তেমনি পরিবারেরও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সন্তানরা কি করছে, কোথায় যাচ্ছে অভিভাবকদের তা খোঁজ খবর নিতে হবে।

বর্তমান এই পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করে, শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা।

আই/