ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

মাধ্যমিকের ৩৭ শতাংশ শিক্ষক নোট-গাইডে নির্ভরশীল 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০১ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৯ সোমবার

সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর অনুমোদন না থাকলেও ২২ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষকই প্রাইভেট টিউশনির সঙ্গে জড়িত। আর এসব শিক্ষকের মধ্যে ৩৭ শতাংশই গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল। 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণস্বাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) এক সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

এ উপলক্ষে দেশের ৬০০টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার শিক্ষকের ওপর গত বছর একটি জরিপ চালানো হয়। প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ‘সেকেন্ডারি স্কুল টিচারস ইন বাংলাদেশ: ইন দ্য লাইট অব এসডিজি ফোর’ শীর্ষক এডুকেশন ওয়াচ ২০১৮-১৯ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গণস্বাক্ষরতা অভিযান।

রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর এলজিইডি মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মাধ্যমিকের অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছেই প্রাইভেট পড়ে থাকে। আর সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে প্রাইভেট টিউশনির হার ১৭ দশমিক ২ শতাংশ ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

টিউশন করার হার গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে বেশি। গ্রামে যেখানে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, শহরে সেখানে ৩০ দশমিক ১ শতাংশ। 

বিষয়ভিত্তিক দিক থেকে গণিতের শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনে সবচেয়ে বেশি জড়িত। গণিতের প্রায় ৫১ শতাংশ শিক্ষকই প্রাইভেট টিউশন করান। ইংরেজি, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞানের শিক্ষকদের মধ্যে এ হার যথাক্রমে ৩৭.৫, ২৮.৩ ও ২২.৫ শতাংশ। প্রাইভেট টিউশনের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ শিক্ষকই নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়ান।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নমুনাভুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের প্রথম পেশা শিক্ষকতা। বাকিরা আগে আরেকটি চাকরি করেছেন। দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষক জানিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় একটি পেশা আছে। সেটা হচ্ছে, গৃহস্থলি, কৃষি, ব্যবসা, মৎস্যচাষ। গৃহশিক্ষকতাকেও কেউ কেউ দ্বিতীয় পেশা মনে করেন। এটা ১১.৩ শতাংশ। প্রায় ৭৪ শতাংশ শিক্ষকতা পেশা নিয়ে সন্তুষ্ট নন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রাইভেট টিউশন কিংবা গাইড বইয়ের যে বাণিজ্য সেখানে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা দুটি শ্রেণিই রয়েছে। অভিভাবকদের মধ্যেও কোচিং ও গাইড বইয়ের মাধ্যমে সন্তানের জন্য বাড়তি কিছু পাওয়ার এক ধরনের প্রবণতা রয়েছে। এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের পাঠ্যবইগুলো আরও শিক্ষার্থীবান্ধব করতে হবে। দুর্বোধ্য বইয়ের কারণেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের না শিখিয়ে অনেকে আলাদাভাবে পড়ানো ও গাইড বইয়ের বাণিজ্য করছে। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটিতে যদি শিক্ষিত লোক না থাকেন, তাহলে তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

আই/