‘পানি খেতে চেয়েছিল আবরার’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৭:৪৮ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বীকে অনিক সরকার, সকাল, মোজাহিদ ও মনির ভাইসহ ১৫ ও ১৬ ব্যাচের ভাইরা বেশি মারছে। আবরার পানি খাইতে চাইলে পানি দেওয়া হয় নাই।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবরার হত্যার এজাহারভুক্ত আসামি এএসএম নাজমুস সাদাত গণমাধ্যমকে এতথ্য জানান।
নাজমুস সাদাত বলেন, মনির ভাই আমাদের বলে,আবরারকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে আসতে। তখন আমরা নিচে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসি। আমি রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুমে চলে আসি। আমি আবরারকে মারিনি। তবে তাদের মার দেখে আমি তাদের বলেছিলাম, আবরারকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে,তবে আমার কথায় তারা কান দেয়নি। এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে আজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর ডিবির লালবাগ জোনাল টিমের পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. ওয়াহিদুজ্জামান এ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, সাদাত মামলার এজাহারনামীয় ১৫ নম্বর আসামি।
মামলার তদন্ত, সাক্ষ্য প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণে এ আসামি সূত্র বর্ণিত মামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার সম্পর্কে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইতিপূর্বে এ মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিকারীদের মধ্যে কয়েকজন এ আসামি জড়িত মর্মে নাম প্রকাশ করেছেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে জন্য এ আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
রিমান্ড শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের জিআরও এসআই মাজহারুল ইসলাম ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। এরপর আসামি নাজমুস সাদাতের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করেন কিছু বলার আছে কি না?
রিমান্ডে যাওয়া সাদাত বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি জয়পুরহাট জেলার সদর থানার কড়ই উত্তর পাড়ার মো.হাফিজুর রহমানের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটিতে এ পর্যন্ত ছয় জন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার,উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির ও শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান।
মামলাটিতে রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, আকাশ হোসেন ও মিজানুর রহমান।
রিমান্ডে রয়েছেন, বুয়েট ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, বুয়েটের শিক্ষার্থী শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, সাসছুল আরেফিন রাফাত ও হোসেন মোহাম্মাদ তোহা।
প্রসঙ্গত, আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। গত ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। রাত ৩টার দিকে হল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
টিআর/