বিল্ড বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর উদ্বোধন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৩৩ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
কনস্ট্রাকশন, বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি, পানি, সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি, লাইটিং এবং রিয়েল এস্টেট শিল্পের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শুরু হয়েছে। চলবে আগামীকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানটি ঢাকার কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) সেমিনার হলে প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ইএমডি রেজওয়ান ফেরদৌস খান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সেমস্ গ্লোবাল এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিস. মেহেরুন এন ইসলাম এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর তানভীর কামরুল ইসলাম।
২৬তম বিল্ড বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০১৯, সেমস গ্লোবাল আয়োজন করেছে। যা পূর্বে কন-এক্সপো নামে পরিচিত ছিল। তিন দিন ব্যাপী আয়োজিত এই সমন্বিত প্রদর্শনীতে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপাররা অবকাঠামো উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সকল গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি এবং পরিসেবাসমূহ সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন।
প্রদর্শনীটির পৃষ্ঠপোষকতায় থাকবে ২২তম পাওয়ার বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৯, ১৭তম সোলার বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৯, দ্বিতীয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল লাইটিং এক্সপো ২০১৯, তৃতীয় ওয়াটার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০১৯, ২০তম রিয়েল এস্টেট এক্সপো-বাংলাদেশ ২০১৯, এবং চতুর্থ ইন্টারন্যাশনাল সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো বাংলাদেশ ২০১৯।
এতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, সুইডেন, জার্মানী, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, উজবেকিস্তান, ইউএই, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মিশর, শ্রীলঙ্কা, ফিনল্যান্ড এবং তুরস্কসহ বিশে^র ১৪টির অধিক দেশের ২৬৭টি কোম্পানি এবং ৩০০ টির অধিক স্টল উক্ত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করেছে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সর্বাধুনিক এবং উদ্ভাবনী কনসেপ্ট, সরঞ্জমাদি, প্রযুক্তি এবং পরিসেবা প্রদর্শন করার কথা রয়েছে।
দি স্পেক্টেটর ইনডেক্স অনুযায়ী, গত দশ বছরে ২৬ টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড অর্জন করেছে। ২০০৯ সাল হতে, দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বর্তমান মূল্যে ১৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দশকে, চীনের অর্থনীতি বেড়েছে ১৭৭ শতাংশ, ভারতের ১১৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ৯০ শতাংশ, মালয়শিয়ার ৭৮ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার ৪১ শতাংশ এবং ব্রাজিলের ১৭ শতাংশ।
২০০৯ সালে দেশের জিডিপি’র আকার ছিল ১০২ বিলিয়ন ডলার। বিশ্ব ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর সুষম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে তা ২৭৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জুনে জিডিপি’র আকার ৩০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এই পরিসংখ্যানগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করে এবং বিবিধ শিল্পে নতুন নতুন অবকাঠামো উন্নয়নের আবশ্যকতার ইঙ্গিত বহন করে। বহু দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং বর্তমানে বহু কোম্পানি বাংলাদেশে উৎপাদন ইউনিট খোলারও পরিকল্পনা করছে।
একটা দেশের অবকাঠামো হলো একটা গুরুত্বপূর্ণ চাকা। যা অর্থনীতিকে অধিকতর প্রবৃদ্ধির দিকে চলমান রাখার জন্য দরকার। বর্তমানে দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন হলো মেট্রো রেল, অ্যাকসেস কন্ট্রোলসহ এক্সপ্রেসওয়ে, ডাবল-ডেকার পদ্মা সেতু (সড়ক ও রেলপথ), সাবওয়ে, বিআরটি (বাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইনস), বিমানবন্দর টার্মিনাল, কর্ণফুলি টানেল, এবং পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়াও, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ফ্যাক্টরি, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অল এবং হাই-টেক পার্কের আরও উন্নয়ন হবে। এগুলোর জন্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংগ্রহণ আবশ্যক।
প্রদর্শনীর পাশাপাশি এখানে দুটো সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত “ইন্ডাস্ট্রিয়াল রুফটপ সোলার-কেপেক্স, ওপেক্স মডেল” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। “সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াটার অ্যান্ড ওয়াটারওয়েস্ট: ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড অপারেশনস” শীর্ষক অপর সেমিনারটি আগামীকাল সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে, সেমস গ্লোবাল গত ২৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর আমেরিকায় বহুজাতিক প্রদর্শনীর আয়োজক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সেমস গ্লোবাল বিশ্বের সাতটি দেশ থেকে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং বাণিজ্য ও অর্থনীতির সকল গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রতি বছর ৪০ টিরও বেশী প্রদর্শনীর আয়োজন করছে।
নিউইয়র্কে অবস্থিত সদরদপ্তর হতে গ্রুপের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাছাড়া, ভারত, চীন, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা এবং ব্রাজিলে সেমস গ্লোবালের শাখা অফিসগুলো থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আরকে//