ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রাজশাহীতে আটক ভারতীয় জেলে কারাগারে

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:৫১ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০২:৫৪ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার

রাজশাহীর চারঘাটের পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরতে আসা আটক ভারতীয় জেলে প্রণব মন্ডলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

চারঘাট থানার ওসি সমিত কুমার কুন্ডু জানান, বিজিবির হাবিলদার হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে দুইটি মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলার মধ্যে একটিতে প্রণবের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেকটিতে অভিযোগ আনা হয়েছে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে বেআইনিভাবে মাছ শিকারের।

গ্রেফতার প্রণব মন্ডলের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার ছিড়াচর গ্রামে। তার বাবার নাম বসন্ত মন্ডল। বৃহস্পতিবার তাকে আটকের জের ধরে বিজিবি ও বিএসএফ মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে নিজেদের একজন সদস্য নিহত এবং আরেকজন আহত হওয়ার দাবি করেছে বিএসএফ। তবে বিজিবি বলছে, তারা ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। নিহত বা আহত হওয়ার বিষয়টি বিজিবি এখনও নিশ্চিত নয়। এ নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চারঘাট উপজেলা সদরের বিপরীতে পদ্মা ও তার শাখা বড়াল নদের মোহনা শাহরিয়ার খাল নামক এলাকায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এলাকাটি ভারতের চর পাইকমারি সীমান্ত থেকে ৬৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে। এই ঘটনার পর বিকালে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফের পক্ষ থেকে তার কাছে দাবি করা হয়েছে, গোলাগুলিতে তাদের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও একজন। তবে বিজিবি তা নিশ্চিত নয়।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযানে যায় বিজিবি। এ সময় মাছ ধরার সময় তিনজন জেলেকে আটকের চেষ্টা করা হলে দুইজন পালিয়ে যান। তবে প্রণবকে জালসহ আটক করে নদীর এপারে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারী ক্যাম্প থেকে চার সদস্যের একটি টহল দল স্পিড বোট নিয়ে অনুমতি ছাড়া শূন্য লাইন অতিক্রম করে অবৈধভাবে বাংলাদেশের ৬০০ থেকে ৬৫০ গজ ভেতরে নদীর এপারে বিজিবি টহল দলের কাছে আসে এবং আটক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দিতে বলে।

বিজিবি টহল দল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিককে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে বলে তাদের জানায়। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা ভারতীয় নাগরিককে বিজিবির কাছ থেকে নিয়ে মারধর করেন। তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে আনুমানিক ৬ থেকে ৮ রাউন্ড ফায়ার করে। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবির টহল দল ফাঁকা ফায়ার করে। তখন বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিহত বিএসএফ সদস্যের নাম বিজয় ভান সিং। আর আহত জওয়ানের নাম রাজবীর সিং। রাজীবর বিএসএফের ১১৭ নম্বর ব্যাটেলিয়নের হেড কনস্টেবল। বিএসএফের বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও এদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।