মেডিকেল কলেজ যদি পারে পাবলিক ভার্সিটি কেন পারে না?
তানভীর আলাদিন
প্রকাশিত : ০৫:৫৮ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:০৭ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার
অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ আর যুদ্ধে শামিল হওয়া যেন একই সমান কষ্টকর!
এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা শুধু স্বপ্ন নয়, অধিকারও বটে। কিন্তু সেই অধিকারটুকু পেতে একজন শিক্ষার্থী এবং তার পরিবারের হয়রানি ও অর্থ কষ্টটা এখন অবর্ণনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।
একমাত্র মেডিকেল কলেজ আর কৃষি বিশ্ববিদ্যালেয়ের ক্ষেত্রে এটি সহনীয় পর্যায়ে, কারণ ওখানে একবার মাত্র পরীক্ষা নিয়ে মেধার ভিত্তিতে বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তির জন্য উত্তীর্ণদের নাম ঘোষণা করে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলো প্রত্যেক ইনস্টিটিউটে আলাদাভাবে নেয় বলেই এই ত্রাহি-ত্রাহি অবস্থা।
এছাড়াও ইনস্টিটিউটগুলোর ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কারণে প্রতিযোগির সংখ্যা বিপুল পরিমাণে থাকে তাই বিড়ম্বনাটাও বিশাল।
ইনস্টিটিউটগুলোর নানাবিদ ফি নেয়ার পাশাপাশি দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়াত, থাকা-খাওয়ার বাণিজ্য বেসাতিটায়ও চলছে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি।
আবার কোনো কোনো ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগুলো কয়েক ঘন্টা কিংবা দিনের ব্যবধানে হচ্ছে বলেই যাযাবরদের মতো দৌঁড়াতে হচ্ছে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের। সেখানে ট্রেন কিংবা বাসের টিকিটগুলো কয়েক মিনিটের মধ্যেই চলে যাচ্ছে কালোবাজারিদের হাতে। অভিভাবকদের গুনতে হচ্ছে তিনগুনেরও বেশি টাকা। সেটিও সময় মত হাতে পেলে মনে হয় নিজেকে চন্দ্র বিজয়ী।
একজন শিক্ষার্থীকে যদি পৃথকভাবে ১১ থেকে ১২টি ইনস্টিটিউটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় তাহলে ছেলেদের ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকার মতো লাগলেও, মেয়ে শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে নুন্যতম একজন অভিভাবকসহ দেড়গুনের বেশি খরচ হচ্ছে।
যেহেতু এক একটা আসনের বিপরীতে ৬০ থেকে ২০০ জনকে লড়াই করতে হচ্ছে, তাই এতগুলো ইনস্টিটিউটে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার পরও ভর্তি হতে পারাটা ভাগ্য নির্ভর হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় বেসরকারি ইনস্টিটিউটে পড়াতে গেলে অভিভাবকদের ফতুর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
আমার মনে হয়, দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের এই পুরো ভর্তি প্রক্রিয়াটা নিয়ে আগামীতে বিশেষভাবে নজর দেয়া প্রয়োজন। না হয় ইনস্টিটিউটগুলোর একটু বাণিজ্য সুবিধার নামে এই নৈরাজ্য চলতেই থাকবে। বন্ধ হবে না হয়রানি।
এসি