এবার পাষণ্ড পিতার নির্মমতার বলি আড়াই বছরের শিশুপুত্র
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার
নিহত শিশু রহমত প্রমাণিক
এবার ফরিদপুরের সদরপুরে পাষণ্ড পিতার চরম নির্মমতার বলি হলেন আরেক শিশু। আড়াই বছরের ঘুমন্ত শিশুকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ধানক্ষেতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই পিতার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন খুনি পিতা হানিফ প্রমাণিক (৩০)।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের মকবুল মুন্সী ডাঙ্গী গ্রামের বাড়ির পাশের ধান ক্ষেত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিশুর নাম রহমত প্রমাণিক।
এদিকে এহেন ন্যক্করজনক ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খুনি পিতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, হানিফ প্রমাণিক ফরিদপুরের সদরপুর-পুকুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের লেগুনা চালক। গত তিন বছর আগে স্থানীয় স্বপ্না আক্তারকে বিয়ে করে ঘরে আনে সে। তবে বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এমনকি শিশু রহমতের জন্মের পর থেকেই স্বপ্নাকে সন্দেহ করতো হানিফ। মাঝে মধ্যেই বলতো, রহমত তার সন্তান নয়। এ নিয়ে একাধিকবার ঝগড়া-বিবাদ হয় স্ত্রী স্বপ্নার সঙ্গে। স্থানীয়ভাবে তা মিটিয়েও দেয়া হয়।
নিহত শিশুর দাদা শুকুর মুন্সী জানান, রাতে তার পুত্রবধূ শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে রাত ১০টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে দেখেন তার পাশে সন্তান নেই। এসময় সে চিৎকার শুরু করে। স্থানীয়রা রাতেই বাড়ির আশে পাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরবর্তীতে ধানক্ষেতে পাওয়া যায় শিশু রহমত প্রমাণিকের লাশ।
শিশুটির মা স্বপ্না আক্তার বলেন, বেশ কিছুদিন সন্তান নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বিরোধ চলছিলো তার। শিশু সন্তানটিকে আমার স্বামী তার সন্তান বলে স্বীকার করছিলো না। এ নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি আসার পর আমার সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দেয়। রাত ১০টার দিকে আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার সন্তান পাশে নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুজি করে বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতের ভেতর আমার সন্তানের লাশ পাই। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে আমার স্বামী পলাতক রয়েছে।
সদরপুর থানার ওসি মোঃ লুৎফর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিহতের মা শনিবার সকালে তার স্বামীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা হানিফ প্রামাণিককে আটকের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এমএস/