শিক্ষকদের আলটিমেটাম: দাবি না মানলে বিদ্যালয়ে তালা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০০ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৪:০৪ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং সহাকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়ার এক দফা দাবি না মানলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। এ সময় দাবি মানার জন্য ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।
বেতন বৈষম্য নিরসনে এক দফা দাবিতে আজ বুধবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করার জন্য জড়ো হন তারা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে পুলিশি বাধায় সেখানে সমাবেশ করতে না পেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকায় সমাবেশ করেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান মুখপাত্র মো. বদরুল আলম বলেন, ‘শহীদ মিনারে সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি। ফলে দোয়েল চত্বরে সমাবেশ করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে দাবি না মানলে সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করা হবে। এরপরও দাবি না মানলে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে না। তারপরও দাবি না মানলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘সমাবেশ অংশ নেয়ার জন্য সারাদেশ থেকেই শিক্ষকরা জড়ো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে, লাঠিচার্জ করেছে। পরে দোয়েল চত্বর থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে আজকের কর্মসূচি শেষ করা হয়েছে। তবে এখনো শিক্ষকরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আছেন।’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের মোট ১৪টি সংগঠন মিলে গঠিত হওয়া ‘মোর্চা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ করার কথা ছিল প্রাথমিক শিক্ষকদের। তবে পুলিশি বাধায় তা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকায় অবস্থান নেন।
সেখানে দাবি পূরণ করার জন্য আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বেতন বৈষম্যের নিরসন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা না করা হলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জন করার হুশিয়ারি দেন তারা।
ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ নতুন কর্মসূচির কথা জানিয়ে বলেন, আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করবেন। তারপর বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেবেন তারা।
দোয়েল চত্বরে পরিষদের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান কর্মসূচি ঘোষণা করে আজকের কর্মসূচি শেষ করেন। তবে এই ঘোষণার পরেও অনেক শিক্ষক ওই এলাকায় এখনো বিক্ষিপ্তভাবে রয়ে গেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘দাবি মোদের একটাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে এর আগেও চলতি মাসে শিক্ষকরা চারদিন বিভিন্ন মেয়াদে কর্মবিরতিও পালন করেন। এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর পূর্ণদিবস, ১৬ অক্টোবর অর্ধদিবস, ১৫ অক্টোবর ৩ ঘণ্টা এবং ১৪ অক্টোবর ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।
এদিকে বেতন বৈষম্য নিরসন প্রক্রিয়াধীন থাকা সত্ত্বেও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি দেওয়ায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। গত ১৩ অক্টোবর এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
টিআর/