নুসরাত হত্যার রায়: আদালতে আসামিরা (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১৮ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:২৫ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ অন্য আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়েছে।
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদের আদালতে রায় ঘোষণা করা হবে। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মামলার ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবালিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকে হাফেজ আহাম্মদ বলেন, ‘নুসরাতের রায়ের দিকে গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে। প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
এ মামলা গত ১০ এপ্রিল পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৯ জুন পিবিআই ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
আদালত ২৭ জুন হতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ৬১ কার্যদিবসে ৮৭জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২৪ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করে।
আলোচিত এই রায়কে ঘিরে জেলা শহর, আদালত এলাকা ও সোনাগাজী উপজেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া রায়কে ঘিরে বুধবার রাত থেকে নুসরাতদের বাড়িতে পাহারা জোরদার করা হয়েছে। প্রহরায় নিয়োজিত আগের তিনজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আরও ৯ সদস্যকে যুক্ত করা হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত লোকজনও রেজিস্ট্রার খাতায় সই না করে ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন না। গত ৭ এপ্রিল থেকে বাড়িটিতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে জেলা সদর ও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও টহল দিচ্ছে ।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজেল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে তার মা। ২৮ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট এএসএম এমরানের আদালতে নুসরাত তার উপর যৌন নিপীড়নের জবানবন্দি প্রদান করে। একই দিন সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শাহজাহান সাজু জানান, মামলা তুলে না নেয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছে। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।
ফেনীর অন্য কোন মামলা এত দ্রুততর সময়ে রায় হয়নি বলে মন্তব্য করেন পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ।