জাবি উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১৪ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণ এবং তাকে ‘দাপ্তরিক কাজ’ থেকে বিরত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ও নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখেন। অবরোধ চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে চাইলে আন্দোলনকারীরা তাতে বাধা দেন। আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে ভবনে ঢুকতে পারেননি তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘উপাচার্য তার স্বামী, সন্তান ও বিশ্ববিদ্যায়ের সকল শাখায় ভারপ্রাপ্তদের রেখে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, যৌন নিপীড়কের পৃষ্ঠপোষক ফারজানা ইসলামের দিন ফুরিয়ে এসেছে। আমরা তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের মাঠে থাকব।’
ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ন্যক্ক্যারজনক ব্লেমিং গেইম শুরু করেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি আটককৃত দুইজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বর্তমান প্রক্টরের ডিপার্টমেন্টের অন্য জন সদ্য সাবেক প্রক্টরের ডিপার্টমেন্টের। সেই জায়গা থেকে আমরা এই আন্দোলন বানচালের ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ তারপরও যদি এখানে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলে তবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা।’
এদিকে শিবির সন্দেহে আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাবেক শিক্ষার্থীর বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সভাপতি জুয়েল রানার নেতৃত্বে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা চার দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে আটক শিবির নেতাদের বিচার নিশ্চিত করা, তাদের পরিকল্পনাকারী ও অর্থের যোগনদাতাদের শনাক্ত করে বিচার নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করে আটকদের সঙ্গে জড়িতদের বের করে বিচারের আওতায় আনা এবং সারাদেশ থেকে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করা।
সমাবেশে জুয়েল রানা বলেন, ‘স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সঙ্গে আরও অনেকেই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এসব অপতৎপরতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই জড়িত সকলকে খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে আইন করে শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।’
অন্যদিকে উপাচার্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনকে বানচাল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের ডাকে মশাল মিছিল আয়োজন করা হয়। এসময় মিছিল থেকে দু’জন শিবির কর্মীকে ধরা হয় বলে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে এ ধরনের ‘পরিকল্পিত নাটক’ সাজানো হয়েছে।
এমএস/এসি