ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

ঝালকাঠিতে তালিকায় থেকেও ঘর পায়নি দুই নারী

আজমীর হোসেন তালুকদার, ঝালকাঠি: 

প্রকাশিত : ১০:২৪ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার

টাকা দিতে না পারায় প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা সত্বেও তাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যকে ঘর দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন দুই নারী। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা। সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের চৌপালা গ্রামের হতদরিদ্র স্বামী পরিত্যক্তা মনোয়ারা বেগম ও একই গ্রামের অসহায় বিধবা কুলসুম বেগম এ অভিযোগ করেন। 

সরকারের এ মহতী কর্মসূচী বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নানা অনিয়ম, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও আর্থিক দূর্নীতির অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগে জানা গেছে ।

স্বামী পরিত্যক্তা হতদরিদ্র মনোয়ারা বেগম অভিযোগে জানান, তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে প্রতিবন্ধী এক ছেলেসহ অন্য বাসায় ঝিয়ের কাজ করে কোনমতে তিনি সংসার চালান। ছেলে-মেয়ে নিয়ে একটি ভাঙ্গা ঘরে কোনরকম বসবাস করছেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকার ঘর বরাদ্ধ করার সংবাদ পেয়ে তিনিও আবেদন করলে প্রাথমিক তালিকায় তার নাম আসে।

পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফিরোজ হাওলাদার চুরান্ত তালিকায় নামদেয়ার বিনিময়ে তার কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় তাকে বাদ দেয়া হয়। পরে সে জানতে পারে যে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে চৌপালা গ্রামের কালু মিয়ার স্ত্রী রেনুকে বরাদ্ধ দেয় হয়েছে।

অন্যদিকে বিধবা কুলসুম বেগম অভিযোগে করেন, তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি বহুদিন যাবৎ একটি ছাপরা ঘরে বসবাস করে আসছেন। পরে সরকার ঘর আসার খবর পেয়ে সে একটি ঘরের আবেদন করলে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর তার নামও তালিকায় আসে। পরবর্তীতে ঘরের বিষয় বাসন্ডা ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট কবির তাকে জানায়, ঘর পেতে হলে ৪০ হাজার টাকা লাগবে। টাকা না দিলে ঘর পাবেনা। সে টাকা না দিতে পারায় কবির একই গ্রামের রুস্তুমের ছেলে ইউসুফের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার নিয়ে তাকে ঘরটি বরাদ্ধ দিয়েছে বলে শুনেছে।

এ বিষয় বাসন্ডা ইউপি সদস্য ফিরোজ হাওলাদার সাংবাদিকদের জানায়, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা আমারা নামে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে। ঘর দেওয়ার ব্যপারে আমাদের কোন হাত নেই কারন ঘর বরাদ্ধের তালিকা চুরান্ত করেছে চেয়ারম্যান। ইউসুফের ঘর পাওয়ার বিষয়ে তিনি শুনেছেন যে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগিনা তৌহিদ লস্কর ইউসুফকে ঘর দেওয়ার জন্য শুপারিশ করায় তাকে ঘর বরাদ্ধ করা হয়েছে।

সরেজমিন খোজ নিয়ে জানাযায়, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গরীব, অসহায় ও গৃহহীন ব্যক্তিদের জন্য সরকারী ভাবে বিনামূল্যে কিছু ঘর বরাদ্ধ আসে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তাদের ঘনিষ্ট কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের হস্থক্ষেপে নিজেদের ঘনিষ্ট, দলীয়, আত্মীয়-স্বজনকে অর্থের বিনিময়ে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নামে এসব ঘর বরাদ্ধ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে অবহিত হয়েও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা রহস্যজনক কারনে সম্পূর্ন নীরব ও উদাসীন ভ’মিকা পালন করছে।

আরকে//