সাভারে হাসপাতালে মৃতের কাগজপত্র আটকে রাখার অভিযোগ
সাভার সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৪:০৩ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার
রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারে বেসরকারি ল্যাব জোন হাসপাতাল (প্রা.) লিমিটেডে ভুল চিকিৎসায় আনোয়ার হোসেন (৫৩) নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। এমনকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থাপত্র ও পরীক্ষা-নীরিক্ষার কোনও কাগজপত্র রোগীর স্বজনদের দেখায়নি বলেও অভিযোগ।
মারা যাওয়া মুদি দোকানি আনোয়ারে হোসেন ঢাকার ধামরাই উপজেলার ছোট চন্দ্রাইল এলাকার বাসিন্দা।
মারা যাওয়া মুদি দোকানির মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত সমস্যার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বাবা আনোয়ার হোসেন তার শরীরের হাঁড়ের জয়েন্টের ব্যথায় ভুগছিলেন। গত ১ সেপ্টেম্বর বিকালে তাদের এলাকার ওষধ ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম তার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের ল্যাবজোন হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে হাসপাতালের ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান ও মালিক ওয়াকিলুর রহমান তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর পিত্ত থলিতে পাথর হয়েছে জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন না করলে তার বাবা মারা যাবে বলে ভয় দেখায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, এঘটনার পরদিন ২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় তার বাবাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করিয়ে দীর্ঘক্ষণ পর তার অবস্থা মুমূর্ষু বলে জানান চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে তাকে আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এসময় তার বাবার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। পরে জোরপূর্বক তার বাবাকে ল্যাবজোন থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন তারা। কিন্তু সেখানে নেয়ার পূর্বেই তার বাবার মৃত্যু হয় বলেও জানান নিহতের মেয়ে।
এঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত তার বাবার মরদেহ ধামরাইয়ের ছোট চন্দ্রাইল এলাকায় তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন।
নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হলেও চিকিৎসা প্রদানের কাগজপত্র ও ডেথ সার্টিফিকেট দিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে অনেকবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না।
ল্যাব জোন হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ওয়াকিলুর রহমান জানান, এতদিন পর তারা রোগী মৃত্যুর অভিযোগ কেন করছেন? ওই সময় কেন বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তারা জানালেন না? আর চিকিৎসা প্রদানের কাগজপত্র ওই দিনই রোগীর পরিবার নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এছাড়া রোগী এনাম মেডিকেলে মারা গেছেন দাবি করে ডেথ সার্টিফিকেট তারাই প্রদান করবেন বলেও জানান তিনি।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, এঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে পরবর্তীকালে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন সাহাবুদ্দিন মানিকের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়টি তিনি জানতেন না। তবে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
একে//