ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

যে কারণে সাকিবের শাস্তি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৩ এএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১০:৫৫ এএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার

সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে ক্ষমা চাওয়ায় এক বছর নিষিদ্ধ এবং বাকি এক বছর আইসিসির বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দিতে হবে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি২০ অধিনায়ককে।

২০১৭ সালের নভেম্বরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে বিপিএল খেলছিলেন সাকিব। ওই বছর সাকিবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো যোগাযোগ করেন দীপক আগারওয়াল নামে ভারতীয় একজন বাজিকর। মূলত তার সঙ্গে হওয়া সব যোগাযোগ আইসিসির কাছে দাখিল না করার দায়েই সাকিবকে নিষিদ্ধ করর আইসিসি।

আইসিসি জানিয়েছে, ২০১৭ সালের মধ্য নভেম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে সাকিবের সঙ্গে দেখা করতে বারবার জোর করেন আগারওয়াল।

এর পর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। ওই টুর্নামেন্টের সময় আবার আগারওয়ালের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কয়েকবার আলোচনা হয় সাকিবের।

পরে ১৯ জানুয়ারির ম্যাচে সাকিব সেরা খেলোয়াড় হন। সেদিন সাকিবকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা পাঠান আগারওয়াল। পাশাপাশি এটাও বলেন, আমরা কি এখানে কাজ করব নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করব?

‘কাজ’ বলতে এখানে দলের ভেতরের খবর বোঝানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিসি। এই যোগাযোগের কথা সাকিব আইসিসি বা বিসিবি বা কোনও ধরনের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষকে জানাননি।

এর চার দিন পর আবার আগারওয়াল বার্তা পাঠান সাকিবকে, ‘ব্রো, এই সিরিজে কিছু হবে?’

সাকিব জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, কিছু হওয়া বলতে বোঝানো হচ্ছিল দলের ভেতরের খবর জানিয়ে দেওয়াকে।

যথারীতি এই ঘটনাও সাকিব সংশ্লিষ্ট কোনও কর্তৃপক্ষকে জানাননি। এরপর গত বছরের এপ্রিলে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে খেলেন সাকিব। আগারওয়াল এবার একজন ক্রিকেটারের ব্যাপারে জানতে চান যে সে ওই ম্যাচে খেলছে কি না। আবারও জানতে চান দলের ভেতরের খবর।

সেখানেই না থেমে সাকিবের সঙ্গে বিটকয়েন, ডলার অ্যাকাউন্ট নিয়ে কথা বলেন আগারওয়াল। জানতে চান সাকিবের ডলার অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত। এই আলোচনার সময়ই সাকিব বলেন, যে তিনি ‘আগে’ দেখা করতে চান আগারওয়ালের সঙ্গে।

সেদিনের বেশ কিছু বার্তা সাকিব মুছে ফেলেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানান, সেগুলো ছিল দলের ভেতরে খবর জানতে চাওয়ার কথা।

আইসিসি জানিয়েছে, ওই আলোচনার পরই আগারওয়ালকে নিয়ে সাকিবের ভাবনা হতে থাকে। আগারওয়াল একজন জুয়াড়ি হতে পারেন ভেবেও সাকিবের ধারণা হয়। তবে সেদিনের কথাও সাকিব সংশ্লিষ্ট কোনও কর্তৃপক্ষকে জানায়নি।

এরপর তদন্তের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ও ২৭ আগস্ট সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানান যে, আগারওয়ালের কাছ থেকে কয়েকবার প্রস্তাব পেয়েও তিনি তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাননি। এটাও বলেন যে, তিনি জানতেন প্রস্তাব পেয়েও না জানানো মানে আইসিসির বিধি ভঙ্গ করা।

আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের কাছে সাকিব দাবি করেছেন, আগারওয়ালের অনুরোধে সাড়া দিয়ে কোনও তথ্য তিনি জোগান দেননি। আগারওয়ালের কাছ থেকে অর্থ বা উপঢৌকন নেননিও বলে দাবি তারকা ক্রিকেটারের।

তিনবার প্রস্তাব পেয়েও কর্তৃপক্ষকে না জানানোর কথা যেহেতু প্রমাণিত হয়েছে, ধারা অনুযায়ী শাস্তি পেয়েছেন সাকিব।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল নিশ্চিত করেছে যে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সাকিবকে তিনবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, কোনোবারই সাকিব সেকথা আইসিসিকে জানাননি।

একে//