বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২১ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার প্রতিবাদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সমাবেশ করেছে।
বুধবার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এসএম রফিকুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। অধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবে না বলে ঘোষণা দেন। তবে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এসএম রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবার বেলা এগারোটার দিকে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এসএম রফিকুল ইসলাম তার কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আইসিটি’র দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক মো.আসাদুজ্জামান ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কলেজের ছাত্রী ও অবিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তিনি ওই শিক্ষককে নোটিশ দেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন। এই নোটিশের খবর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা ক্লাস বর্জন করে ক্ষোভে ফেটে পড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এসএম রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কলেজের ছাত্রী ও অবিভাবকদের কাছ থেকে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ পেয়ে আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যথাযথ কারণ দর্শাতে বলেছি। এই কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে ওই শিক্ষক কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে উষ্কাচ্ছে। ওই শিক্ষকের প্ররোচনায় শিক্ষার্থীরা আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এসএম রফিকুল ইসলাম কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আইসিটি’র দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেইনি। ওই নোটিশ ভিত্তিহীন। তিনি এই কলেজে গত প্রায় চার বছর ধরে আছেন। তিনি স্বেচ্ছাচারী, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে ক্ষুব্দ হন। তিনি এই কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকে ক্যাম্পাসের গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। পুকুরের মাছ ধরে নেন। আমরা তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা তার অপসারণ চাই। তিনি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস বর্জন থাকবে বলেও হুশিয়ারি দেন তারা।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, কলেজে ভর্তির সময় আমরা পরিচয়পত্র, কলেজ বাসের ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে টাকা দেই। অথচ আমরা কলেজের কোন সুযোগ সুবিধা পাইনা। পরিচয়পত্র গ্রহণের সময় নতুন করে আবার টাকা দিতে হয়েছে। মাসে মাসে টাকা দিয়েও আমরা কলেজের বাসে উঠতে পারিনা।
অভিযোগ ওঠা আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ সকালে কলেজে এসে দেখি আমাকে একটা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট। অবিভাবক বা শিক্ষার্থীরা আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়নি। আমাকে হেয় করতে অধ্যক্ষ এই নোটিশ দিয়েছেন। তাই তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কোন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আর ক্লাসে যাবে না বলে হুশিয়ারী দেন ওই শিক্ষক।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থী বা অবিভাবকরা যে আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে কলেজের ছাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ রয়েছে তা আমরা আগে জানতে পারিনি। আজই আমরা অধ্যক্ষের কারণ দর্শানোর লিখিত চিঠির মাধ্যমে জানতে পারলাম।
কেআই/আরকে