ঢাকা, বুধবার   ০৯ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৪ ১৪৩১

ইবি ছাত্রলীগ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১০ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের আরেকটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের এই অডিওতে রাকিব অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সাথে আদালত ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা বলতে শোনা যায়।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টেবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অডিওটি ভাইরাল হলে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

ফাঁসকৃত অডিও সূত্রে জানা যায়, সম্পাদক রাকিব অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ, আইন বিভাগ ও গণিত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

কথোপকথনে অজ্ঞাত ব্যক্তি বলেন, ‘ফিন্যান্সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছেলে আবেদন করেছে। আইন বিভাগে একটা সার্কুলার হয়ে রয়েছে। আর গণিত বিভাগের সাইফুলের স্ত্রীর ব্যাপারটা কনফার্ম করতে হবে। 

এসময় রাকিব অডিওতে বলেন, সে ব্যাপারটা হবে। কিন্তু মেলা টাকা লাগবে। হাইকোর্টে একটা রিট করতে হবে। রিট করে রায় কিনে আনতে হবে। হাইকোর্টের এমন এমন জায়গায় এমন এমন লাইন, আপনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে রায় দিবে। শুধু টাকা লাগবে। এসব পথ আমি পাড়ি দিয়া এসেছি। রায়টাই সব কেনা যাবে।

মঙ্গলবার রাকিবের এই অডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হলেই শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে তাৎক্ষণিক রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শাখা ছাত্রলীগ পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষীণ করে প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তারা রাকিবের আদালত অবমাননার প্রতিবাদ ও তার কঠোর শাস্তির দাবি জানায়। 

এদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননার প্রতিবাদে বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান,‘সম্পাদক রাকিব তার কথোপকথনের মধ্য দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে অবমাননা করেছে। আদালতকে অবমাননা করা দন্ডনীয় অপরাধ। আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জোর দাবি জানায় তারা।’

অডিওর বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন,‘এই অডিও সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তাছাড়া এমন কোন কথাও কারো সাথে আমার হয়নি।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর সম্পাদক রাকিবের ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের পদ কিনে আনা সংক্রান্ত একটি অডিও ফাঁস হয়। ওই অডিও ফাঁস হওয়ার পর শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে সম্পাদক রাকিব ক্যাম্পাসে আসলে ৪ দফায় ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাস ছাড়া করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। একই সাথে সভাপতি পলাশকেও ক্যাম্পাস থেকে লাঞ্চিত করে বের করে দেয় কর্মীরা। 

কেআই/আরকে