কেন্দ্রে সালিশের আগে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি রাজশাহীর দুই নেতার
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:০২ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:০৩ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। প্রায় দেড় বছর ধরে এই দুই নেতার মুখ দেখাদেখি বন্ধ। এক মঞ্চে উঠেন না বা থাকেন না তারা। এ অবস্থায় এই দুই নেতার কোন্দল মেটাতে আগামী ৮ নভেম্বর কেন্দ্রে সালিশ ডাকা হয়েছে।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ওই দিন জেলার নেতৃবৃন্দকে ঢাকায় তলব করেছেন। গত ১৩ অক্টোবর রাজশাহীতে বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তাদের ঢাকায় ডাকা হয়।
তবে ওই প্রতিনিধি সভায় বিভাগের সব জেলার পক্ষ থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেলেও কোন্দলের কারণে রাজশাহী জেলা আওয়ামী সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়নি।
এরই মধ্যে জেলার এই দুই শীর্ষ নেতা আবার জেলহত্যা দিবসে পৃথকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ওই দিন তারা পৃথকভাবে শোডাউন দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। ঢাকায় সালিশের আগে এই কর্মসূচির মাধ্যমে কার পক্ষে কি পরিমাণ জেলার নেতাকর্মী রয়েছে তা দেখাতে চান তারা।
জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলহত্যা দিবসে দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে জেলার সঙ্গে সমন্বয় করে সকল উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে জেলহত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
জেলার সাধারণ সম্পাদককের কর্মসূচিতে রয়েছে ৩ নভেম্বরের প্রথম প্রহরে অর্থাৎ রাত ১২.০১ মিনিটে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাজ ধারণ। সকাল ৭টায় দলীয় কার্যালয়ে সারাদিন মাইকে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার। সকাল ৮টায় লক্ষীপুর মোড়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বেলা ১১টায় লক্ষীপুর মোড়ে শোক র্যালি ও সমাবেশ। দুপুর ২টায় লক্ষীপুর মোড়ে খাবার বিতরণ ও দোয়া মাহফিল।
অপরদিকে, গত ৩০ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলার সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি জেলহত্যা দিবসের পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তার ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০.৩০ মিনিটে গোরহাঙ্গা শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর থেকে শোক র্যালি বের হবে।
র্যালিটি শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এ কর্মসূচিতে রাজশাহীর সব সংসদীয় আসনের এমপি, সকল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সব উপজেলা চেয়ারম্যান, সব পৌরসভার মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সহযোগী সংগঠনের জেলা পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নেতাকর্মীসহ উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলহত্যা দিবসে কোনও শোডাউন নয়; বিশাল শোক র্যালি করা হবে। সভাপতি দির্ঘদিন ধরে জেলার কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন না। তাই তাকে ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা করে বিভিন্ন দিবসের কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সভাপতির যে কর্মসূচি সেটি তার ব্যক্তিগত। সেটি জেলার কর্মসূচি নয় বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যাওয়ার পরিবেশ নেই। তাই সেখানে যাওয়া হয় না। জেলহত্যা দিবসে তার ঘোষিত কর্মসূচি জেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে এ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আই/