ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল থেকে রক্ষা পেতে সন্দ্বীপে প্রস্তুতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫১ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহবিপদ সংকেত এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতরের এ ঘোষণার পর পর চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাপক গ্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।  

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় ও ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকা সন্দ্বীপ উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচারণা শুরু করেছে।

শনিবার সকাল থেকে হরিশপুর ২নং ইউনিট সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ সকল ইউনিট একযোগে প্রচার প্রচারনা শুরু করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। রাস্তা,বেড়িবাঁধে মানুষকে সচেতন করছে। এছাড়াও পরিত্যাক্ত সাইক্লোন সেল্টারকে অবস্থানের উপযোগী করা হয়েছে।

সিপিপি হরিশপুর ২নং ইউনিটের সাথে একাত্ম হয়ে পৌর মেয়র জাফর উল্যা টিটু, পৌর-আওয়ামী সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম, কমিশনার শাহাদাৎ বিল্লাহ খাঁন মহসিন ও ইউনিয়ন টিম লিডার মো. দুলাল প্রচারনা চালাচ্ছেন। ২ নং ইউনিটের টিম লিডার কার্তিক চক্রবর্তী,বাদল রায় স্বাধীন,মিঠু মজুমদার,পলি রানী নাথ,অশ্রু বিশ্বাস,ঝিনুক বিশ্বাস,সীমা ভদ্র, সতি রানী ভদ্র, পাভেল রায়, প্রান্ত চক্রবর্তী, শুভ দে সবার অংশ গ্রহণ ছিলো সক্রিয় ও চোখে পড়ার মতো।

বাদল রায় স্বাধীন জানান, সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়ে আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। আশা করি, সন্ধ্যার মধ্যে সবাই সেল্টারে আশ্রয় নেবে। আমাদের প্রচারণায় গর্ভবতী, প্রসূতি নারী ও প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধদের সবার আগে শেল্টারে নেওয়ার আহবান করেছি। আমার সহযোগী সকল স্বেচ্ছাসেবক যেকোনো সময় প্রস্তুত রয়েছে। এবং ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বিপদ সীমা নিচে নামা পর্যন্ত সকলে সক্রিয় থাকবে সেটা প্রত্যাশা করছি।

সিপিপির পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, সন্দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়নের ১৪৬ ইউনিটের ৭৩০ নারী ভলান্টিয়ার ১৪৬০ পুরুষ ভলান্টিয়ারসহ মোট ২১৯০ জন ভলান্টিয়ার দুর্যোগের প্রস্তুতি মুলক প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সন্বোধী চাকমা বলেন,সন্দ্বীপে ১১০টি সাইক্লোন শেল্টার মানুষের অবস্থানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, পাঁচ হাজার লোক শেল্টারে অবস্থান নিয়েছেন। এবং শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন উপকরণ স্টকসহ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ও রাতে খাওয়ার পর বেশির ভাগ লোক শেল্টারে ফিরবেন বলে মনে করি।

সন্দ্বীপ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম জানান পৌর এলাকায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে আমি সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়েছি। যারা এখনো শেল্টারে ফেরেননি তাদের রাতে গিয়ে আমরা নিয়ে আসবো শেল্টারে।

এদিকে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা দুর্যোগ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সন্দ্বীপবাসীর পাশে দাঁড়াতে নিজের সংসদীয় এলাকায় ফিরে এসে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল দপ্তরের অফিসারদের নিয়ে জরুরি সভায় অংশগ্রহণ করে দুর্যোগ মোকাবেলার সর্বশেষ আপডেট জেনে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

কেআই/আরকে