ছয় উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ
নাজমুশ শাহাদাৎ
প্রকাশিত : ১০:৪৭ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ১০:৫৬ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৯ রবিবার
হতাশ মুশফিক
ইতিহাস গড়ার ম্যাচে আজ ভারতের মুখোমুখি টাইগাররা। এমনই ম্যাচে লোকেশ রাহুল আর শ্রেয়াস আয়ারের ফিফটিতে ১৭৪ রান তোলে ভারত। অর্থাৎ ইতিহাস গড়তে হলে বাংলাদশ দলকে করতে হবে ১৭৫ রান। সে লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২৬ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধুকছে বাংলাদেশ।
তবে এদিনও ব্যর্থ হন মুশফিক। ফেরেন শূন্য রানেই। যাতে ১১০ রানেই চতুর্থ উইকেট হারায় দল।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৬ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৬ রান। ৩৪ বলে প্রথম ফিফটি হাঁকানো বাঁহাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম আউট হন ৮১ রানে। ৪৮ বল খেলে ১০ চার ও দুই ছক্কায় সাজান এই ইনিংসটি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৫ রানে ক্রিজে আছেন।
এর আগে নাঈমের সঙ্গে ৯৮ রানের এক মূল্যবান জুটি গড়ে মোহাম্মদ মিঠুন ফেরেন সেই চাহারের বলেই। ফেরার আগে ২৯ বলে দুই চার এক ছয়ে ২৭ রান করেন এই ডানহাতি। এরপরের বলেই শুভম দুবের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সবাইকে হতাশ করেন মুশফিক। যদিও একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে একাই ছুটছেন তরুণ নাঈম।
এর আগে জবাব দিতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই পরপর দুই বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। দুই চারে লিটন ৮ বল থেকে ৯ রান করে লং লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও সৌম্য ফেরেন প্রথম বলেই। ফলে দলীয় মাত্র ১২ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা।
আর এ দুইজনকে তুলে নিয়ে হ্যাট্রিকের আশা জাগিয়েছিলেন ভারতীয় পেসার দীপক চাহার। তবে তার সে আশায় পানি ঢালেন এ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া মিঠুন।
নাগপুরে সিরিজ নিষ্পত্তির এ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দলের দুই ওপেনারকে হারায় ভারত। শফিউলের জোড়া আঘাতের পরও লোকেশ রাহুলের ফিফটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। তবে আল-আমিনের হানায় স্তব্ধতা নামে ভারত শিবিরে। পরে ফিফটি পান শ্রেয়াস আয়ারও। মূলত এ দুজনের জোড়া ফিফটিতেই ফাইনালে রূপ নেয়া ম্যাচে ওই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় স্বাগতিক দল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আল-আমিনের প্রথম ওভারেই অস্বস্তিতে ভোগে ভারত। মাত্র তিন রান তুলতে পারে রোহিত-শিখর। পরের ওভারেও সে চাপ অব্যাহত রাখেন শফিউল। যার প্রেক্ষিতে চতুর্থ বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ৬ বল থেকে ২ রান করতে সমর্থ হওয়া আগের ম্যাচের নায়ক রোহিত শর্মা। যাতে মেডেন উইকেট-ওভার উপহার দেন শফিউল।
এরপর নিজের তৃতীয় ওভারে এসে শিখরকেও ফেরান শফিউল। ফেরার আগে ১৬ বলে চার বাউন্ডারিতে ১৯ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে। অবশ্য এরপরেই আরেকটি উইকেট পেতে পারতেন এই টাইগার পেসার। তবে পয়েন্টে ওঠা আয়ারের সহজ সে ক্যাচ রাখতে পারেননি আমিনুল বিপ্লব। যাতে হতাশ হতে হয় গোটা বাংলাদেশকে।
যার খেসারৎ ঠিকই দিতে হয় বাংলাদেশ দলকে। শূন্য রানেই জীবন পাওয়া আয়ার পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ২৭ বলেই তুলে নেন ঝোড়ো ফিফটি। যদিও ৫২ রানেই ফিরতে হয় তাকে। ইনিংসের ১৭তম ওভারে পার্টটাইমার সৌম্যের শিকার হয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অবশ্য ওই ওভারের প্রথম বলেই ঋষভ পান্টকে (৬) বোল্ড করে ফেরান তিনি।
পরে এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া মানিশ পান্ডের ব্যাটে চড়ে ১৭৭ রানের সংগ্রহ গড়ে ভারত। পাঁচ উইকেট হারিয়ে। ১৩ বল থেকে ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন মানিশ। সঙ্গে ৮ বলে ৯ রান নিয়ে থাকেন দুবে।
এর আগে ফিফটি করা লোকেশ রাহুল ফেরেন দলীয় ৯৪ রানে। তার আগে আয়ারের সঙ্গে গড়েন মূল্যবান ৫৯ রানের জুটি। লং-অনে লিটনের হাতে ধরা পড়ার আগে ৩৫ বলে সাত চারে তিনিও করেন ৫২ রান।
এদিন সিরিজ জয়ের এ ম্যাচে যেন একেবারেই ধারহীন ছিলেন মোস্তাফিজ, আমিনুল ও আফিফরা। সেইসঙ্গে হাত ফসকে যাওয়া ফিল্ডিংও ছিল চোখে পড়ার মত। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে এমন করুণ অবস্থা নিয়ে কোন দলের পক্ষেই জয় পাওয়াটা সম্ভব নয়।
এদিকে, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ ম্যাচে যারা জিতবে সিরিজ যাবে তাদেরই ঘরে। অঘোষিত ফাইনাল। ভারত-বাংলাদেশ দুই দলই আজ সিরিজ দখলের লড়াইয়ে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, নাগপুরের এই মাঠে ভারতের জয়ের রেকর্ড খুব একটা ভাল নয়।
তাইতো ভারতের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের হাতছানি দেখছে বাংলাদেশ। এমন ম্যাচে টাইগাররা যে মরণ কামড় দেবে তা বলাবাহুল্য। তবে ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের সুযোগ এত সহজে ছাড়তে চাইবেন না ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা।
এনএস/