ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

সেলাই না করেই পালাতে গিয়ে চিকিৎসক আটক, প্রসূতির মৃত্যু

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৩৬ এএম, ১২ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

পাবনার চাটমোহরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকের এক প্রসূতিকে সিজার করে সেলাই ও আনুষঙ্গিক কাজ না সেরে পালানোর সময় কথিত চিকিৎসকসহ দু,জনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। পরে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাছলিমা খাতুন (৩৫) নামের প্রসূতিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল নামে একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।  

মারা যাওয়া তাছলিমা খাতুন উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী। আটক কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন নীরব পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। আটক আরেকজন তার সহকারী আসাদুজ্জামান। তবে ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার তাছলিমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য স্বজনরা তাকে পৌর শহরের নারিকেলপাড়া মহল্লায় অবস্থতি ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করান। রাত সাড়ে আটটার দিকে কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন নীরব, তার সহকারি আসাদুজ্জামান, ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু এবং দু’জন নার্স মিলে অস্ত্রোপচার করেন এবং একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়।

এ সময় রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে অবস্থা বেগতিক দেখে কথিত সার্জন ও তার সহকারী পালানোর সময় তাদের আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। তবে এর মধ্যে কৌশলে পালিয়ে যায় ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু।

এ ঘটনার পর রোগীর স্বজন এবং স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়লে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে তাছলিমা খাতুনকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বায়েজীদ-উল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ওই ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগীকে সেলাই না করেই সবাই পালায়। পরে শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে (তাছলিমা) পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, সাদ্দাম হোসেন এবং তার সহকারী আসাদুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৩ জুলাই ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামের ওই ক্লিনিকে এনেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়া রোগীর অস্ত্রোপচার এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অস্ত্রোপচারের কারণে কথিত ওই সার্জন এবং ক্লিনিক মালিককে জরিমানা করেন এসিল্যান্ড মো. ইকতেখারুল ইসলাম। এছাড়া ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়। তবে কাউকে না জানিয়ে সিলগালা ভেঙ্গে আবারও ওই ক্লিনিকে অপারেশন শুরু করে কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন এবং ক্লিনিক মালিক আমির হোসন বাবলু।

একে//