ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

এবার নিষিদ্ধ হচ্ছেন রোনালদো!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৫৪ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

দিবালা ও রোনালদো

দিবালা ও রোনালদো

ঘরের মাঠে এসি মিলানের বিপক্ষে জুভেন্টাসের ম্যাচে ৯০ মিনিটের আগেই তুলে নেয়ায় রাগে মাঠ ছেড়ে চলে যান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তাতেই যেন নিজের বিপদ ডেকে আনলেন সিআরসেভেন। দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারেন জুভ তারকা।

গত রোববার (১০ নভেম্বর) সিরি-আ'র গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঘরের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় এসি মিলানকে আথিতেয়তা দেয় জুভেন্টাস। সেই ম্যাচে ৫০ মিনিট পেরিয়ে গেলেও গোল পায়নি স্বাগতিকরা। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো। শেষমেশ তাকে তুলে নিয়ে পাওলো দিবালাকে মাঠে নামান কোচ মাওরিসিও সাররি।

তবে সেটা মেনে নিতে পারেননি রোনালদো। রাগে ও ক্ষোভে ম্যাচ শেষ হবার আগেই স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান তিনি। এরপর তো সরাসরি নিজ দেশ পর্তুগালেই উড়ে যান হালের এই ফুটবল সুপারস্টার।

যদিও সেদিন দিবালার একমাত্র গোলেই জয় পায় জুভরা। ম্যাচ শেষে অবশ্য রোনালদোর পক্ষেই কথা বলেন কোচ সাররি। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তার কোনও সমস্যা নেই। সে দারুণ ফুটবলার। তবে আমি এখন তাকে সেভাবে পাচ্ছি না।

দিবালাকে মাঠে নামানো নিয়ে সাররি বলেন, নতুন একজন খেলোয়াড়কে মাঠে নামালে যেটা হয়, সে পুরো শক্তি দিয়ে লড়তে পারে। আর বদলি করাটা খেলার একটি অংশ। রোনালদো একটু রেগে গেছে বৈকি!

তবে এটা নিয়ে ইতালিয়ান লিগের নিয়মনীতির মাঝে পড়লে রোনালদোর কপাল পুড়বে নিশ্চয়ই। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা অ্যান্তোনিও ক্যাসানো তার শাস্তির কথা আলোচনায় এনে বলেছেন, নিয়ম মোতাবেক দুই বছর নিষিদ্ধ হতে পারেন তিনি।

এ নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন। নিশ্চিতভাবে এটা রোনালদোভক্তদের জন্য নিতান্তই দুঃসংবাদ। কারণ এখন তার বয়স চলছে ৩৪ বছর। এ বয়সে অনেকে বুটজোড়া তুলে রাখার প্রস্তুতি নেন। সেখানে মানসিক জোরে খেলে যাচ্ছেন মেসির প্রতিদ্বন্দ্বী।

অন্যদিকে, রোনালদোর শারীরিক অবস্থাও ভালো যাচ্ছে না ইদানীং। ফিটনেস সমস্যায় ভুগছেন তিনি। এ অবস্থায় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা পেলে তার ক্যারিয়ার যে শেষ হয়ে যাবে- নিঃসন্দেহে তা বলে দেয়া যায়!

ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে। সেদিন লকোমোটিভ মস্কোর মাঠে হোঁচট খাওয়ার পালা হয়েছিল জুভদের। ৮১ মিনিটে ম্যাচ যখন ১-১ সমতায় তখনই রোনালদোকে মাঠ থেকে তুলে নেন জুভেন্টাসের প্রধান কোচ মারিসিও সাররি। তার বদলে পাওলো দিবালাকে মাঠে নামান তিনি। বেঞ্চ ছেড়ে উঠে এসেই চমকে দিলেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।

ম্যাচের শেষ মহূর্তে গোল করে জুভেন্টাসকে জেতান ডগলাস কস্টা। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের জয়সূচক গোলে প্রত্যক্ষ অবদান রাখলেন দিবালা। রোববার রাতেও একই দৃশ্যের পুনর্মঞ্চায়ন হলো। উঠে যেতে হলো রোনালদোকে। এবার ইতালিয়ান সিরি’এ লিগের ম্যাচে; ঘরের মাঠ তুরিনের এসি মিলানের বিপক্ষে।

এই ম্যাচে রোনালদোকে এক ঘণ্টাও রাখেননি কোচ; ৫৫ মিনিটেই উঠিয়ে নেন সাররি। পর্তুগিজ যুবরাজের চোখে-মুখে তখন ক্ষোভ আর হতাশার ছাপ। মাঠ থেকে বের হয়ে ডাগ আউটেও যাননি ‘সিআর সেভেন’। তিনি গিয়ে দাঁড়ালেন টানেলে! সেখানে দাঁড়িয়েই রোনালদো দেখলেন তার বদলে যাকে নামানো হয়, সেই দিবালাই ৭৭ মিনিটে করেছেন ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোল।

পরপর দুই ম্যাচে রোনালদোর বদলি হিসেবে মাঠে নেমে কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। তাতে হতাশা বাড়ছে রোনালদোর। গোল পাচ্ছেন না বলে পুরো ম্যাচ তাকে খেলাচ্ছেন না কোচ। এনিয়ে মুখ ফুটে রোনালদো কিছু বলেননি, তবে কোচের সিদ্ধান্ত যে পছন্দ হয়নি সেটা বোঝা গেছে তার শরীরী ভাষাতেই।

কেন রোনালদোকে পুরো ম্যাচ খেলানো হচ্ছে না? উত্তরে জুভেন্টাস কোচ জানালেন, দলের সেরা তারকা ইনজুরি শঙ্কায় আছেন। গত মাসে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন রোনালদো। সেখানেই নাকি অস্বস্তি বোধ করছেন পর্তুগিজ যুবরাজ। কিন্তু পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের অভিব্যক্তি বলছে অন্য কথা। পুরো ম্যাচ খেলতে চান তিনি।

খেলোয়াড় যত বড় তারকাই হোন না কেন, দলীয় স্বার্থ সবকিছুরই ঊর্ধ্বে। সেরা খেলোয়াড়ের উপস্থিতির চেয়েও দলের জয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রোনালদো বোধহয় এটা এখন টের পাচ্ছেন হাড়ে হাড়ে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পর্তুগিজ তারকা কি আসলেই ইনজুরির শঙ্কায় আছেন, নাকি প্রচারমাধ্যমকে বলার জন্য কথাগুলো বলেছেন সারি? এ নিয়ে চর্চার শেষ নেই।

কেউ কেউ এমনও বলছেন, জয়ের জন্য রোনালদোর দিকে আর তাকিয়ে থাকেন না জুভেন্টাস কোচ। পর্তুগিজ সুপারস্টার দলের সেরা খেলোয়াড় কিনা এ নিয়েও প্রশ্ন উঠল। প্রকৃত ঘটনা যাই হোক, গোলখরায় ভুগতে থাকা রোনালদোর আরও সুযোগ প্রাপ্য। এখন দেখার জুভেন্টাসের পরের ম্যাচে তাকে পুরো দেড় ঘণ্টা গোল করার সুযোগ সাররি দেন কিনা!

এনএস/