ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় নতুন বীমার আওতায় আসছে বাংলাদেশিরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৫৯ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৬:০৪ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৯ বুধবার

মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বীমার আওতায় বিদেশি কর্মীদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিবন্ধিত হচ্ছেন। আর এর আওতায় দুই লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিবন্ধিত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রক্রিয়ায় কোম্পানি সকসো’র অধীনে কর্মীদের নাম নিবন্ধন করছেন।  বাংলাদেশ ২য় স্থানে থাকলেও ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে দেশটিতে কর্মরত বৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের শতভাগ বীমার আওতায় নিয়ে আসতে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা নিরলস চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগকর্তা এবং সকোসো'র সাথে নিয়মিত বৈঠক করে অগ্রগতি ফলোআপ করছেন বলে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা জানান।

মালয়েশিয়ার সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশে ওয়েজ আর্ণার্স ওয়েল ফেয়ার বোর্ডের সহযোগিতায় বেনিফিট প্রদান করবে। তাই গত ২৩ অক্টোবর প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ার সকসোর ডেপুটি চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মি. ইনকিক জন রিবা অনাক মারিনের নেতৃত্বে সকসোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপ সচিব মো. আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের প্রোগ্রামার পাপ্পু মজুমদার ও দূতাবাসের লিগ্যাল এ্যাডভাইজার মি. সিলভা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় কর্মরত বিদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বিধান চালু করার ঘোষণা দিয়েছিল দেশটির মন্ত্রিপরিষদ। ওই দিনই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সে দেশের মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

মানব সম্পদমন্ত্রী বলেছেন, মালয়েশিয়ার সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার (সকসো’র) অধীনে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক কর্মরত বিদেশি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বিধানের আওতায় কোম্পানীর মালিক পক্ষ তাদের বিদেশি কর্মীদের বীমার আওতায় নিবন্ধন শুরু করেছেন।

এর আগে সকসো’র অধীনে শুধু স্থানীয় নাগরিকরাই এ সুবিধা পেতেন। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কর্মস্থলে দুর্ঘটনার পরিমাণ কমাতেই এ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এটি সফল বাস্তবায়ন হলে নিয়োগকর্তারা বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও স্বচেষ্ট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে কর্মী আজীবন পেনশন পাবে।

গত ১১ নভেম্বর কুয়ালালামপুরের ম্যাট্রেড কনভেনশন সেন্টারে (এমইসিসি) মাইসনারজি সিস্টেম সিনারজি এবং সিস্টেম লঞ্চ প্রোগ্রামে উপ-প্রধানমন্ত্রী ওয়াইবা দাতুক সেরি ডাঃ ওয়ান আজিজাহ ডা. ওয়ান ইসমাইল প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে  (এমওসি) হস্তান্তর করেন।

২০২০ সালের বাজেটে বর্ণিত উদ্যোগগুলিকে স্বাগত জানিয়ে উপ-প্রধানমন্ত্রী, ওয়াইবা দাতু সেরি ডা. ওয়ান আজিজাহ ডা. ওয়ান ইসমাইলও বলেন, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় কর্মীর অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষা সংস্থা (এসওসিএসও) আর্থিক পরামর্শদাতা এজেন্সি (একেপিকে), গিয়াত মারা, মালয়েশিয়া (এআইএম) এবং মালয়েশিয়া ডিজিটাল কো-ওপারেশন (এমডিইসি) এর সহযোগিতায় সুবিধাভোগীদের অর্থনৈতিক অবস্থা ও মান বাড়ানোর জন্য এই প্রোগ্রামটি চালু করা হয়। এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দাতুক সেরি মোহাম্মদ আজমান আজিজ মোহাম্মদ বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে সোকসো তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে প্রসারিত করতে সক্ষম হবে।

মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান বলেন, বিদেশি কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের সকসো’র সঙ্গে নিবন্ধন করতে হবে এবং কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা আইন ১৯৬৯ (অ্যাক্ট-৪) এর  আওতায় আনতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, এতে কর্মসংস্থানে ক্ষতির পরিকল্পনার অধীনে চিকিৎসা সুবিধা, অস্থায়ী কর্ম অক্ষমতা সুবিধা, স্থায়ী অক্ষমতা সুবিধা এবং পুনর্বাসন সুবিধার পাশাপাশি  প্রত্যাবাসন খরচের সুবিধা পাবে।  

কেআই/আরকে