৩০ বছর পর খুলল গৃহবধূ সগিরা মোর্শেদ হত্যার জট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০২ এএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:০৪ এএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
ছিনতাইকারী নয়, খুনিদের রক্ষা করতেই আরেকটা ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজানো হয় গৃহবধূ সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায়। ৩১ বছর পর অবশেষে সেই হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে।
১৯৮৯ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছেই প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় এই নারীকে। ঐ স্কুলেই সগিরা মোর্শেদের মেয়ে পড়ালেখা করত। হত্যার পরই ছিনতাইকারী সাজিয়ে খুনিদের রক্ষা করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যা আরেকটা ‘জজ মিয়া’ নাটক।
ঐ সময়ে এক মন্ত্রীর চাপেই এ নাটক সাজানো হয়। তার আত্মীয় এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় মন্ত্রী প্রভাব খাটিয়ে মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নিয়ে যান। এরই মধ্যে সগিরা মোর্শেদের স্বামীর বড়ো ভাই, ভাবিসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুনি মারুফ রেজা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মাত্র ২৫ হাজার টাকার চুক্তিতে সগিরা মোর্শেদকে হত্যা করেন।
রমনা মডেল থানার তৎকালীন ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র ৩০ মিনিট রমনা থানায় মামলাটি পুলিশের কাছে ছিল। ময়নাতদন্ত শেষ করে এসেই দেখি, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
তৎকালীন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এটি যে কোনো ছিনতাইয়ের ঘটনা নয় তা স্পষ্ট। কারণ হত্যাকারীরা তাকে গুলি করে সরাসরি পালিয়ে যায়। কোনো ধরনের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেনি। গুলি করে হত্যার ধরন দেখে ঐ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছিলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
প্রসঙ্গত, সগিরা মোর্শেদের হত্যার খবর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রী-অভিভাবকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দীর্ঘদিন স্কুলের ক্লাস বন্ধ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সগিরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলনে হত্যার পরিকল্পনা ও কারণ জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গৃহবধূ সগিরা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সগিরার স্বামীর ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা। দুই বাসার বুয়াদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল বলে জানায় পিবিআই।
এসএ/