ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৫৩ পিএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৯ রবিবার
দেশের ১৬ কোটি মানুষই ক্রেতা-ভোক্তা হলেও তাদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় কোন পৃথক মন্ত্রণালয় নাই। ব্যবসায়ীদের জন্য নিয়োজিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ক্ষুদ্র অধিদপ্তরের মাধ্যমে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও এটিও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। আর ভোক্তাদের জন্য সবকিছুর ভার দেয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের উপর।
ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত বানিজ্য মন্ত্রণালয় ভোক্তা স্বার্থের বিষয়টি দেখার কারণে ভোক্তা স্বার্থ বারবার উপেক্ষিত ও ভুলন্টিত হচ্ছে। বিষয়গুলি অনেকটাই বিড়ালকে মাছ পাহারা দেবার মতো। ফলে ব্যবসায়ীরা মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে একবার পেঁয়াজ, একবার চাল, একবার মসলা, একবার সয়াবিন এভাবে পুরো বছর জুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে জনগনের পকেট কাটছে। অন্যদিকে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের মূল কাজ হলে ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারণ। সেকারনে দেশের ভোক্তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বার্ষিক চাহিদা নিরুপণ, উৎপাদন, যোগান, বাজারজাতকরণে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অনুসন্ধান, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে চিন্তা করার সময় বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের থাকে না।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হলেও জেলা পর্যায়ে একজন কর্মকর্তা দিয়ে কোন প্রকার লজিস্টিক সুবিধা ছাড়াই তাঁরা কাজ করছে। আর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খোদ রাজধানী ঢাকা শহরে তার কোন অস্থিত্ব খুজে পাওয়া কঠিন। যদিও সরকার ভোক্তা সংরক্ষন আইন, নিরাপদ খাদ্য আইন সহ নানা উদ্যোগ নিলেও তার সুফল জনগন পাচ্ছে না। সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত ও ভোক্তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে হলে আইন প্রয়োগে সরকারী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভব হবে না। ১৫ নভেম্বর ২০১৯ইং নগরীর হামজারবাগ অর্নিবান ক্লাব মিলনায়তনে ক্যাব ০৭নং পশ্চিম ষোল শহর ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে গণসচেতনতা সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড সভাপতি এ বি এম হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। ক্যাব ৭নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মহিন উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোঃ হাসানুজ্জমান। আলোচনায় অংশনেন ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, দক্ষিণ জেলার সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান, চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জানে আলম, পাঁচলাইশ থানার সহ-সভাপতি সায়মা হক, পাঁচলাইশ থানার সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওর্য়াডের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন স্বপন, সহ-সভাপতি মোঃ ইদ্রিস, সহ-সভাপতি শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি কোহিনুর বেগম, আফরোজা পারভীন রোজী, যুগ্ম সম্পাদক এম এ আউয়াল, যুগ্ন সম্পাদক ফাতেমা রহমান ময়না, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলমগীর প্রমুখ।
বক্তাগন আরও বলেন ১ কোটি ভোক্তার জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় না থাকায় প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ সকল মহলের কাছে ভোক্তাদের বেদনা, ভোগান্তি জানানো সম্ভব হচ্ছে না। তারা ভোক্তাদের কথা শুনার চেয়ে ব্যবসায়ীদের কথা শুনতে আগ্রহী। ফলশ্রুতিতে ভোক্তাদের হয়রানি, ভোগান্তির চেয়ে ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলি গণমাধ্যমে বেশী করে প্রচারিত হচ্ছে। যার অন্যতম দৃষ্ঠান্ত পেঁয়াজের মূল্যের সেঞ্চুরী। গণমাধ্যম ও প্রশাসন ব্যবসায়ী তোষননীতির কারনে ২০ টাকার পেয়াজ এখন আড়াইশ টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেয়াজ মজুত করে দাম বাড়িয়ে জনগনের পকেট কাটলেও সরকার জনগনের কষ্ঠ লাগবে কোন কার্যকর ব্যবস্থ নিতে সক্ষম হচ্ছে না।
আরকে//