ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

সন্দ্বীপের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাবেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:১০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালে প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপ অনুযায়ী সন্দ্বীপ সীমানা নির্ধারণের দাবিতে (১৯৫৪ সালে সংশোধিত থানা ম্যাপ) এবং চট্টগ্রাম জেলার অধীন সন্দ্বীপ উপজেলার অন্তর্গত সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসানচরকে নোয়াখালী জেলার অধীন থানা ঘোষণার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে উপরোক্ত বিষয়ে চট্টগ্রাম-ঢাকা ও সন্দ্বীপে আন্দোলনরত সংগঠন সমূহের যৌথ সমন্বয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোর্ট বিল্ডিংস্থ শহীদ মিনার চত্বরে (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান এর হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ভাসানচর ও ৬০ মৌজার দাবীতে চলমান আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম লিমিটেড ঢাকার সভাপতি মো. নূরুল আকতার।
 
উক্ত নাগরিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, চিরাচরিত নিয়মে নদীর এপার ভাঙ্গে ওপার গড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ৬৩০ বর্গমাইল বিশিষ্ট সন্দ্বীপ পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে ভাঙ্গণের শিকার হয়ে এখন মাত্র ৮০ বর্গমাইলে পরিণত হয়েছে। সন্দ্বীপ থেকে সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চরের দূরত্ব মাত্র ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার আর আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলা হাতিয়ার নলাচির ঘাট থেকে ভাসান চর প্রায় ২০ কিলোমিটার পূর্বে। সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসানচর জেগে উঠার পর থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের বন বিভাগ থেকে সন্দ্বীপ বন রেঞ্জের মাধ্যমে বনায়ন করা হচ্ছিল। সঙ্গত কারণেই সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন বর্তমান ভাসান চর সন্দ্বীপ মানচিত্রের অংশ। কিন্তু, ভাসান চর-কে নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়া উপজেলা তাদের ভূমি দাবি করায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সন্দ্বীপবাসী এর প্রতিবাদ করে চলছে। সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শেষ করার জন্য  সন্দ্বীপবাসী ভূমি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে ভূমি মন্ত্রণালয় জরিপকাজ সম্পন্ন করার জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ অফিস আদেশ জারি করে। জরিপ কাজ শুরু হওয়ার পূর্বেই গত ২১ অক্টোবর ২০১৯ আকস্মিকভাবে সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়নকে নোয়াখালী জেলার অধীন ভাসান চর নামে থানা হিসেবে ঘোষণা করে। সীমানা নির্ধারণ না করেই এমন ঘোষণা অনাকাঙ্খিত এবং অনিয়মতান্ত্রিক।

বক্তারা আরও বলেন, ২০১৬ এর ২ মার্চ মাননীয় ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালে প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপের উপর ভিত্তি করে ২ মাসের মধ্যে জি.পি.এস মান নির্ণয় ও ডাটা সংগ্রহ করে আন্তঃজেলার সীমানা নির্ধারণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে ঐ সিদ্ধান্ত আজও বাস্তবায়ন হয়নি। আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধাারণ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে সন্দ্বীপবাসী দায়ের করা একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি সারা বাংলার অবিসংবাদিত নেত্রী। বাংলার কোন মানুষ যখন অনিয়মতান্ত্রিকতার শিকার হন তখন তীর্থের কাকের মত আপনার দিকেই চেয়ে থাকে। আপনি ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সালের প্রস্তুতকৃত সি.এস ম্যাপ অনুযায়ী সঠিকভাবে আন্তঃজেলা সীমানা নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে নিদের্শনা প্রদান করবেন এটাই আমাদের আকুল আবেদন। আমরা সন্দ্বীপবাসী উপরোক্ত বিষয়ে আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
 
সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ্, সাবেক জেলা জজ মো. আবু সুফিয়ান, গ্রামীণ ব্যবসা বিকাশের সাবেক এমডি সালেহা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক পরিচালক শামছুল কবির খান, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক দিদারুল আলম, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলহাজ শাহ আলম, এস.এম ইব্রাহিম, লায়ন্স ক্লাব অব চট্টগ্রাম সন্দ্বীপের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আলহাজ সলিমুল্লাহ, কালাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল হক চৌধুরী বায়রন, সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের সমন্বয়ক যথাক্রমে মিজানুর রহমান বাবু, আব্দুল কাদের মানিক, মাকছুদের রহমান, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট তসলিমুল আলম, কবিয়াল কে.এম আজিজ উল্যা, মুক্তিযোদ্ধা যথাক্রমে মাইনুর রহমান, নুরছাপা দুলাল, সাবেক সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলহাজ আ.ফ.ম ফোরকান উদ্দিন খান, সমাজসেবক যথাক্রমে আলহাজ কামাল পাশা, মোশারফ হোসেন ডিপ্টি, সাবেক ন্যায়মস্তি ইউনিয়নের নির্বাচিত ৩ বারের মেম্বার সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তীর পুত্র তরুণ চক্রবর্তী, কারগিল হাই স্কুল প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শামসুল মাওলা মনির, মাসিহাতা গ্রুপের ডিজিএম আনোয়ারুল আলম মঞ্জু, অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট আকবর মাহমুদ বাবর, অ্যাডভোকেট এ.এইচ.এম মাইনুল আমীন, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কপিল উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট কমল দাশ, 

কার্গিল হাই স্কুল প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান লিংকন, সম্মিলিত সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব সাংবাদিক ইব্রাহিম অপু, সাবেক ছাত্রনেতা মহিউদ্দিন স্বপন, প্রাণী সম্পদ কর্মচারী সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ট্রাস্ট ইন্স্যুরেন্সের এএমডি মাস্টার আফছার উদ্দিন, সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন, সমাজকর্মী যথাক্রমে রিপন তালুকদার, নিজাম উদ্দিন, সন্দ্বীপ ল’ স্টুডেন্টস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম. হাসান খান, সন্দ্বীপ রক্তদাতা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আকাশ ইকবাল, সাপ্তাহিক আলোকিত সন্দ্বীপ পত্রিকার স্টাফ প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার নুর মোস্তফা আলী হাসান, আওয়ার মাদারল্যান্ড গ্রুপের চীফ এডমিন সাদমান সামি প্রমুখ। 

কেআই/এসি