যে পাঁচটি খাবার খাবেন না
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪৯ এএম, ২১ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১২:৪৮ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
খাবার খেয়ে মানুষ জীবন ধারণ করে। এই খাবারের মধ্যে কিছু খাবার আছে যা মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসব খাবার বাছাই কিংবা রান্নায় যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া নিরাপদে খাওয়া সম্ভব নয়। কেননা খাওয়ার আগে এসব খাবার থেকে বিষাক্ত অংশটি সঠিকভাবে দূর করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই এসব খাবার ডায়েট তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত।
সঠিকভাবে পদক্ষেপ না নিয়ে এসব খাবার খেলে গুরুতর অসুস্থতা তৈরি করে। বমি বমি ভাব থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট, বিকারগ্রস্ত এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে এই খাবার। এমন পাঁচটি খাবার আছে যা খাওয়ার আগে বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া জরুরি। এবার এই পাঁচটি খাবার সম্পর্কে জানা যাক...
পটকা মাছ
পটকা মাছ খুবই ভয়ঙ্কর। এই মাছের শরীরে টেট্রোডোটক্সিন নামের একটি বিষাক্ত জিনিস থাকে, যা সায়ানাইডের চেয়েও মারাত্মক বলে মনে করা হয়। তবে এই ঝুঁকি সত্ত্বেও পাফার ফিশ বা পটকা মাছটি অনেক দেশে দামী খাবার হিসাবে পরিচিত। জাপানে পটকা মাছ জনপ্রিয় একটি খাবার। এই মাছ দিয়ে খাবার তৈরি এবং গ্রাহকদের পরিবেশন করার আগে কয়েক বছর ধরে নিবিড় প্রশিক্ষণ নিতে হয় জাপানের পাচকদের। পটকা মাছ খাবার হিসেবে তৈরির আগে এর মস্তিষ্ক, চামড়া, চোখ, ডিম্বাশয়, যকৃত এবং অন্ত্র দূর করে ফেলতে হয়। যা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই পটকা মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। আমাদের দেশেও পটকা মাছ খেয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে, যা আমরা পেপার-পত্রিকায় দেখেছি।
কাসু মারজু পনির
এই খাবারের বিশেষত্ব হলো- এর ভেতরে থাকে পোকামাকড়। ইটালিয়ানরা এর অনেক ভক্ত। পেকোরিনো পনিরের সঙ্গে কীটের লার্ভা মিশিয়ে কাসু মারজু পনির তৈরি করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পনিরটিকে নরম করে তোলে কীটগুলো। সুতরাং যখন এটি খাওয়ার জন্য দেয়া হয়, তখন পনিরের ভেতরটা অনেকটা ঘন তরল হয়ে থাকে। কীটপতঙ্গের উপাদানযুক্ত হওয়ার কারণে কাসু মারজুর শক্তিশালী এবং স্বাতন্ত্র্য স্বাদ রয়েছে। তবে কাসু মারজুকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পনির বলে বর্ণনা করা হয়। কারণ এটায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করে এটি খেলে পাকস্থলীতে গণ্ডগোল, বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে।
রুবার্ব
অনেক রান্নাতে রুবার্ব ডাঁটা বেশ জনপ্রিয়। ব্রিটিশ মিষ্টান্ন অথবা পানীয় প্রস্ততকারক তাদের খাবার তৈরির উপাদান হিসাবে এটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু রুবার্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে। কারণ ডাঁটার সঙ্গে যে সবুজ পাতাগুলো আছে তার ভেতর থাকে বিষ। এই বিষটি হলো অক্সালিক অ্যাসিড। যা অধিক পরিমাণে মানুষের শরীরে গেলে বমি বমি ভাব, শরীরের খনিজ শোষণ প্রক্রিয়া কমিয়ে দেয় এবং কিডনিতে পাথর তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে। ডাঁটার ভেতরেও অক্সালিক অ্যাসিড থাকে, তবে পাতায় এর পরিমাণ অনেক বেশি। তাই রুবার্ব বেশি পরিমাণে খেলে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সয়াবিনের সঙ্গে রেড বিনস
কাঁচা রেড বিনে এমন একটি উপাদান রয়েছে যা দূর করা না হলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদিও রেড বিনস আর মজাদার সয়াবিন প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন আর খনিজ পদার্থে ভরপুর। কিন্তু এগুলো প্রাকৃতিকভাবে একটি বিষাক্ত জিনিস নিয়ে আসে, তাহলো এনজাইম ট্রিপসিন। যা হজমে বাধা সৃষ্টি করে। তখন পাকস্থলীতে ব্যথা আর বমি ভাব সৃষ্টি হয়। আপনি যদি খেতে চান তবে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে এবং পানি ঝড়িয়ে নিতে হবে। তারপরে এগুলোকে সেদ্ধ করা কিংবা রান্না
করা যেতে পারে।
জায়ফল
বিখ্যাত এই মসলাটি আসে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় একটি গাছ থেকে। অনেক রান্নার প্রস্তুতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান এবং পুডিংয়ের ক্ষেত্রে এটি চমৎকার স্বাদ যোগ করে। মিষ্টান্নের বাইরে জায়ফল আলু, মাংস, সসেজ, সবজি রান্না এমনকি অনেক পানীয় তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। তবে এটি যদি অনেক বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, তাহলে ভীতিকর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন বমি বমি ভাব, ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হওয়া এমনকি মূর্ছা যাওয়া কিংবা মানসিক সমস্যাও তৈরি হতে পারে। তাই জায়ফল যত কম খাওয়া যায় ততোই ভালো। কেননা অসুস্থ হয়ে তো কোন লাভ নেই।
এএইচ/