সুনামগঞ্জে সরকারি জলমহালে অবৈধভাবে মাছ শিকার
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৯ রবিবার
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে মুকসেদপুর দিঘর নামের সরকারি জলমহাল দখল করে অবৈধভাবে মাছ ধরাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে মধ্যনগর থানার ছামারধানী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও দক্ষিণপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রমোদ মল্লিক, ধরাপপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিজয় বিশ্বাসজেলা প্রশাসক বরাবর, গত ২৯ অক্টোবর এবং ১৪ ও ২১ নভেম্বর পৃথকভাবে মোট ৬টি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ৭ অক্টোবর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে মুকসেদপুর দিঘর জলমহালটি ইজারা পাওয়ার জন্য ওই দুটি সমবায় সমিতির পাশাপাশি জয়শ্রী ইউনিয়নের সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠন আবেদন করে।
এর মধ্যে সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলেও ১৪২৬ হতে ১৪২৮ বাংলা সন, মেয়াদের জন্য জলমহালটি ইজারা পেয়েছে বলে এলাকায় প্রচার করে জলমহাল দখল পূর্বক দুই মাস ধরে মাছ শিকার অব্যাহত রেখেছে।
অপরদিকে, দূরে থাকা সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিটি নিকটবর্তী বলে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে, জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সে রিপোর্ট উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত দাবি করে এ রিপোর্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ছামারধানী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও দক্ষিণপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রমোদ মল্লিক।
এদিকে, গত শনিবার সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইজারা প্রক্রিয়াধীন বোয়ালিয়া প্রকাশিত মুকসেদপুর দিঘর নামের সরকারি এই জলমহালটিতে মাছ শিকার চলছে।
এ ছাড়া আবেদনকারী সমিতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূরবর্তী সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা, সবচেয়ে নিকটবর্তী নোয়াগাঁও দক্ষিণপাড়া ও ধরাপপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি।
এ বিষয়ে ধরাপপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিজয় বিশ্বাস বলেন, অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ৩ বার অভিযোগ দায়ের করেছি, এরপরও মাছ শিকার বন্ধ হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের নোয়াগাঁও- ধরাপপুর ওই দুই গ্রাম জলমহালের সীমানায়। কিন্তু, ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা সরস্বতীপুর রূপসী বাংলা কি করে কাছে হয়।
অপরদিকে, রূপসী বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ও জয়শ্রী ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, আমরা মাছ শিকার করছি না। ইজারা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। রূপসী বাংলা সমিতি জলমহালের কাছে। ধরাপপুর- নোয়াগাঁও দূরে।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, যেহেতু জলমহালটি ইজারা হয়নি এটি সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন রয়েছে। জলমহালে মাছ শিকার করা বেআইনী।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী এরকম একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। কোন সমিতি নিকটবর্তী, তা কাগজ না দেখে বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আবু তালেব জানান, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে রূপসী বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি জলমহালের নিকটবর্তী হিসেবে আমরা রিপোর্ট করেছি। যদি কেউ আপত্তি করেন, তাহলে জেলা প্রশাসন হয়তো পুনারায় তদন্ত করতে পারেন।
এআই/এসি