ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সঙ্গীতজ্ঞ মোবারক হোসেন খানের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০০ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত গবেষক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মোবারক হোসেন খান  গত ২৪ নভেম্বর রাজধানীতে নিজ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মহদেহ রাখা হয়। 

এসময় প্রয়াত এই গুণী সঙ্গীতজ্ঞের প্রতি ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ একাডেমির সর্বস্তরের কর্মকর্তা, শিল্পী ও কর্মচারীবৃন্দ।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘মোবারক হোসেন খাঁন বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। সংস্কৃতিতে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর প্রয়ানে আমরা গভীরভাবে শেকাহত’। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভূঁইয়া, পরিচালক রফিকুল ইসলাম এবং মোবারক হোসেন খান এর কন্যা রিনাত ফৌজিয়া, ছেলে তারিফ হায়াত খান ও তানিম হায়াত খান।

ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মৃতিচারণ শেষে সকলের অংশগ্রহণে প্রয়াত এই সঙ্গীতজ্ঞের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এরপরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম রামপুরা এবং দাফন করা হয় শাহজাহানপুর গোস্থানে।

উল্লেখ্য, মোবারক হোসেন খান একজন সঙ্গীত গবেষক ও লেখক। উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে তার জন্ম। স্বাধীনতা উত্তর তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক, ১৯৯৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন এবং ২০০২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

মোবারক হোসেন ১৯৩৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ একজন প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তার চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। 

মোবারক হোসেনের কর্মজীবন শুরু হয় বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে। পরে তিনি বেতারের মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিনি ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রকাশ করেন তার প্রথম সঙ্গীত বিষয়ক বই সংগীত প্রসঙ্গ। বিভিন্ন পত্রিকায় তার সঙ্গীত বিষয়ক লেখা নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় বই বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ। এরপর তিনি রচনা করেন সঙ্গীত মালিকা। পরবর্তীতে তিনি সঙ্গীত ও শিশু বিষয়ক ৫০টির মত গ্রন্থ রচনা করেন।
কেআই/