‘গোল্ডেন ব্লাড’ ধারণ করেন বিশ্বে মাত্র ৪৩ জন!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৩ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
মানুষের শরীরে ‘এ’, ‘বি’, ‘এবি’ এবং ‘ও’ এই চার গ্রুপের রক্ত রয়েছে। প্রতি গ্রুপেরই দুটি ভাগ থাকে। পজেটিভ এবং নেগেটিভ। কারও শরীরে পজেটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হলে তা সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু যাদের শরীরে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত রয়েছে তাদের রক্তের প্রয়োজন পড়লে তা খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। এই নেগেটিভ গ্রুপের মধ্যে বিরল হলো ‘ও’ নেগেটিভ। তবে আরেকটি বিরল রক্তের গ্রুপ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই রক্তকে ‘গোল্ডেন ব্লাড’ নামে অভিহিত করছেন তারা।
আমেরিকান রেড ক্রস সংস্থাটি বলেছে, যেসব গ্রুপের রক্ত প্রতি ১ হাজার জনের মধ্যে একজনের শরীরে থাকে, সেগুলোকে ‘বিরল’ বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ‘ও’ নেগেটিভ হল তেমনই একটি ‘বিরল’ রক্তের গ্রুপ। কিন্তু এমন একটি রক্তের গ্রুপ রয়েছে যা প্রতি ৬০,০০,০০০ জনের মধ্যে ১ জনের শরীরে আছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এটিই হল বিশ্বের ‘বিরলতম’ গ্রুপের রক্ত। রক্তের এই গ্রুপটিকে বলা হয় ‘গোল্ডেন ব্লাড’। চিকিত্সকদের কাছে এটি ‘আরএইচ-নাল’ (Rh-Null) নামে পরিচিত।
সাধারণত, রক্তের কোষগুলোতে ৩৪২টি অ্যান্টিজেন থাকে। এই অ্যান্টিজেনগুলোর কম্বিনেশনই নির্ধারণ করে কোন রক্তের গ্রুপ ঠিক কী হবে। এই অ্যান্টিজেনের ভিত্তিতে মানুষের রক্তকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলি হল, ‘এ’, ‘বি’, ‘এবি’ আর ‘ও’। প্রত্যেকটি রক্তের গ্রুপ আবার দু’ভাগে বিভক্ত, ‘পজেটিভ’ এবং ‘নেগেটিভ’। অর্থাৎ সব মিলিয়ে মানুষের শরীরে মোট আটটি আলাদা আলাদা গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায়। সেগুলো হল, ‘এ পজেটিভ’, ‘এ নেগেটিভ’, ‘বি পজেটিভ’, ‘বি নেগেটিভ’, ‘ও পজেটিভ’, ‘ও নেগেটিভ’, ‘এবি পজেটিভ’ ও ‘এবি নেগেটিভ’।
‘গোল্ডেন ব্লাড’ গ্রুপের রক্তের আরএইচ সিস্টেমের ৬১টি অ্যান্টিজেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে একে ‘বিরল’ বলে গণ্য করছেন বিজ্ঞানীরা। এই ‘আরএইচ-নাল’ নামের রক্তের সন্ধান প্রথম পাওয়া যায় ১৯৬১ সালে।
বিগত ৫৮ বছরে বিশ্বে মাত্র ৪৩ জন মানুষের মধ্যে এই ‘আরএইচ-নাল’ গ্রুপের রক্ত বা ‘গোল্ডেন ব্লাড’-এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই ৪৩ জনের মধ্যে ৯ জন নিয়মিত রক্ত দান করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের শরীরে ‘আরএইচ-নাল’ গ্রুপের রক্ত রয়েছে, তারা যে কোন গ্রুপের মানুষকেই রক্ত দিতে পারেন, তবে সবার থেকে রক্ত নিতে পারেন না। তাই চিকিৎসকদের মতে, যাদের শরীরে ‘আরএইচ-নাল’ গ্রুপের রক্ত রয়েছে, তাদের খুব সাবধানে জীবনযাপন করা জরুরি।
এএইচ/