বছরজুড়েই ফসল তোলেন চুয়াডাঙ্গার কৃষক বাশার
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৩৩ এএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার
বছরজুড়েই ফসল তুলছেন চুয়াডাঙ্গা সদরের গাইদঘাট গ্রামের কৃষক জাবালুল বাশার ওরফে সেলিম বিশ্বাস। নিজের ও ইজারা নেয়া মোট ২০০ বিঘা জমিতে তিনি চাষ করছেন বারোমাসি আম, লিচু, পেয়ারা, আপেল কুল, ধান, গম ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন শাকসবজি। তিনি এমনভাবে এসব আবাদ করছেন, যাতে বছরের কোনো সময়ই তার আয়ের পথ বন্ধ না হয়।
জাবালুল বাশার জানান, তার বাবা ওয়াছিফ আলী সরকারি কৃষি খামারে চাকরি করতেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি আগ্রহ জন্মে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯৭০ সাল থেকেই শুরু করেন চাষাবাদ। সেই থেকে ধীরে ধীরে তিনি আবাদকৃত ফসলের ধরন ও পরিমাণ বাড়িয়েছেন। গড়ে তুলেছেন মায়ের নামে ‘জাহানারা কৃষি খামার’।
বর্তমানে তার এ খামারে রয়েছে বারোমাসি আম ও থাই পেয়ারা। ১০ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং তেল ও মসলাজাতীয় ফসল। মূলত তার এ খামারের কোনো জমি অনাবাদি নেই। এমনকি জমি ঘেরার কাজে ব্যবহূত সিমেন্টের খুঁটির গোড়ায় রোপণ করেছেন ড্রাগন ফলের কাটিং।
জাবালুল বাশার বলেন, ২৫ বছর আগে তিনি আম্রপালি জাতের আম চারা রোপণ করেন। ছয় বিঘা জমির সেই বাগান থেকে প্রথম আম বিক্রি করেন ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকার। বর্তমানে তার খামারে থাইল্যান্ডের বারোমাসি আমের এক হাজারটি গাছ আছে।
সমপরিমাণ রয়েছে থাই পেয়ারার গাছ। এখন পর্যন্ত ৫০ টাকা কেজি দরে ২০০ কেজি থাই পেয়ারা বিক্রি করেছেন। আর বারোমাসি আম পাড়া শুরু করবেন ১৫-২০ দিনের মধ্যেই। এ জাতের আম থেকে বছরে তিনবার ফলন পাওয়া যাবে।
এছাড়া তিনি কৃষি খামারে ধান, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, পালংশাক, ছোলা, লালশাক, মটরশুঁটি, হলুদ, মুলা, বেগুন, কাঁচামরিচ, আলু, গাজর, লিচু ও কাশ্মীরি আপেল ও কুল আবাদ করছেন।
এভাবে তিনি সারা বছরই কোনো না কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। তার খামারে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭ লাখ টাকার মতো। আশা করছেন, বছরজুড়ে ফল ও ফসল বিক্রি করে অন্তত ২০ লাখ টাকা লাভ হবে। তার এ খামারে বর্তমানে ৫০-৬০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তারা প্রতি মাসে আয় করছেন ৭ হাজার ৫০০ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন রাব্বী বলেন, এ ধরনের খামার করে কৃষক জাবালুল বাশার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা তাকে সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, অনেকে এ ধরনের খামার করতে আগ্রহী হচ্ছেন। আর এখানে উৎপাদিত ফল-ফসল যাতে নিরাপদ হয়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
এআই/