বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৭ বছর আজ, জেনে নিন দীর্ঘ ইতিহাস
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
ভারতের অযোদ্ধার আলোচিত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৭তম বার্ষিকী আজ শুক্রবার। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় এই মসজিদ।
আজ এই দিনটি ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা অযোধ্যাকে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রামমন্দির সংক্রান্ত মামলার রায়দানের আগে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল এই ক্ষেত্রেও একইভাবে তৈরি রয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন।
বহু বছর ধরে চলেছে অযোধ্যা মামলা। সম্প্রতি অযোধ্যা মামলায় রায় দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, বিতর্কিত জমিতে তৈরি হবে রাম মন্দির। আর অন্যত্র ৫০০ একর জমি মুসলিমদের দেওয়া হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ১৫২৮ থেকে ২০১৯ রাম মন্দির-বাবরি বিতর্কের ইতিহাস।
১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে অযোধ্যায় তৈরি হয় বাবরি মসজিদ। হিন্দুদের কিছু সংগঠন দাবি করতে শুরু করে মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে এই মসজিদ। ১৮৫৩ সালে প্রথম এই ইস্যুতে বিরোধ বাঁধে।
১৮৫৯ সালে ব্রিটিশরা একটি প্রাচীর দিয় হিন্দু ও মুসলিমদের প্রার্থনার জায়গা আলাদা করে দেয়। এভাবেই ৯০ বছর ধরে প্রার্থনা চলছিল। ১৯৪৯-এ প্রথম এই জমি সংক্রান্ত মামলা আদালতে যায়। সেইসময় রামের মূর্তি স্থাপন করা হয় মসজিদের ভিতরে।
১৯৮৪-তে রাম মন্দির গড়ার দাবি নিয়ে হিন্দুদের একটি কমিটি তৈরি হয়। তিন বছর পর একটি জেলা আদালত নির্দেশ দেয়, যাতে ওই বিতর্কিত এলাকা হিন্দুদের প্রার্থনার জন্য খুলে দেওয়া হয়। মুসলিমরা তৈরি করে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি।
এরপর ১৯৮৯-তে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ওই স্থানে। ১৯৯০-তে রাম মন্দির তৈরির সমর্থনে রথযাত্রা করেন এলকে আদবানী।
১৯৯২-তে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয় কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। দেশ জুড়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়। ১০ দিন পর তৈরি হয় তদন্ত কমিটি। ১৭ বছর পর ২০০৯ সালে সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টে আদবানী, বাজপেয়ীসহ ১৭ জনের নাম ছিল।
২০০৩-এ এই মামলার জন্য আদালত সাতজন হিন্দু নেতাকে তলব করে, তার মধ্যে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতাও ছিলেন। লখনউতে মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীর বিরুদ্ধে মামলা চলে। এবছরের জুলাই মাসে ডেডলাইন দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে ৯ মাসের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা হয়।
২০১০-এ এলাহবাদ হাই কোর্ট একটি রায় দেয়। তাতে বলা হয় ওই বিতর্কিত জমকিতে তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। নির্মৌহী আখড়া, রাম লাল্লা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
প্রথমে তিনজন মধ্যস্থতাকারী দেওয়া হয় এই মামলার জন্য। পরে, গত ৬ অগস্ট থেকে প্রত্যেকদিন এই মামলার শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপরির বেঞ্চ। ১৬ অক্টোবর সেই শুনানি শেষ হয়।
এরপর গত ৯ নভেম্বর এই মামলায় রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
একে//