ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ অনিশ্চিত!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৫৫ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৭:১২ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ সোমবার

মাহমুদুল্লাহ ও এবাদত হোসেন

মাহমুদুল্লাহ ও এবাদত হোসেন

নিরাপত্তাহীনতার ভয় কাটিয়ে আসন্ন জানুয়ারিতে মুশফিক-তামিম-মুস্তাফিজরা পাকিস্তানে যাবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দিবারাত্রির টেস্ট খেলার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)! তবে এ বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি'র প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।

আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) তিনি বলেন, ‘দিবারাত্রির টেস্টের প্রস্তাব বিবেচনা করার আগে আমরা অপেক্ষা করছি সরকারের ছাড়পত্রের। কারণ আপনারা জানেন, পাকিস্তান সফরে নিরাপত্তার একটি বিষয় সব সময় থাকে। তাই সরকারের অনুমোদন লাগবে আমাদের। রাত-দিন তো পরে, আগে আমাদের দেখতে হবে এই সফরে যেতে পারছি কি না। সে জন্য সরকারের প্রতিবেদনের গুরুত্ব আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি।’ 

এদিকে জানা গেছে, সরকারি নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল পাকিস্তান থেকে ফিরেছে বেশ কিছুদিন আগেই। কিন্তু তাদের রিপোর্ট এখনও পৌঁছায়নি বিসিবির কাছে। যে কারণে দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টির সফরের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় বিসিবি। 

তবে এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আগামী জানুয়ারিতেই তো আমাদের পাকিস্তান যাওয়ার কথা। খুব বেশি সময় হাতে নেই। আশা করছি, এ সপ্তাহের মধ্যেই আমরা নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারব। পাকিস্তান সফরে যাব কি না, সেটি জানাতে পারব। এরপর দিবারাত্রির টেস্টের প্রস্তাব নিয়ে ভাবা যাবে।’

অন্যদিকে, পিসিবি অবশ্য ভেবেই রেখেছে যে, বাংলাদেশ এ সফরে যাবে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের জাতীয় নারী দল এবং ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের পাকিস্তান সফরে যাওয়ায় পিসিবি আরও বেশি আশাবাদী। যে কারণে সফরে দুই টেস্টের মধ্যে করাচির খেলাটি গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্টের প্রস্তাব দিয়েছে। 

টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যই অমন চিন্তা বলে জানিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি। তিনি বলেন, ‘টেস্টে দর্শকসংখ্যা ক্রমশ কমার যে সমস্যা, তা ঠেকানোর জন্যই আমরা দিবারাত্রির টেস্ট খেলা নিয়ে ভাবছি। সে কারণেই বাংলাদেশকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আমরা চাই, নিজেদের মাঠের প্রতি সিরিজে অন্তত একটি করে দিবারাত্রির টেস্ট রাখতে।’

সেই ২০০৯ সালে পাকিস্তান সফররত শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের ওপর গ্রেনেড ও রকেট লঞ্চার নিয়ে হামলা করেছিল সন্ত্রাসীরা। এরপর দীর্ঘদিন সে দেশ সফরে যায়নি কোনও ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। সম্প্রতি অবস্থা কিছুটা পাল্টাচ্ছে। এ সময়ে বাংলাদেশ নারী দল এবং বয়সভিত্তিক দল সফর করে আসার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলও সফর করেছে পাকিস্তান।  

খেলে ফিরেছে নিরাপদেই। বর্তমানে দুটি টেস্ট খেলতে ফের পাকিস্তানে গেছে দলটি। আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হচ্ছে যার প্রথমটি। যদিও গত দশ বছরে বিসিবি তার জাতীয় দলকে পাকিস্তানে খেলতে পাঠায়নি একবারও। যে কারণে বিসিবিকে আর্থিক জরিমানা পর্যন্ত দিতে হয়েছে।

তবে আসন্ন জানুয়ারির সফরের ব্যাপারে বিসিবির মনোভাব এখন অনেকটাই ইতিবাচক। দুই টেস্ট এবং তিন টি-টোয়েন্টির দুটি আলাদা সিরিজের সূচি রয়েছে। বিসিবি প্রস্তাব দিতে পারে, এবার পাকিস্তানে গিয়ে শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে আসার। আর টেস্ট সিরিজটি নিরপেক্ষ ভেন্যু সংযুক্ত আরব আমিরাতেই খেলতে চায় বাংলাদেশ। 

তবে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বিসিবি। তবে এ বিষয়েও সবকিছু সরকারি প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করছে বলেই জানান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এ সপ্তাহেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’ 

এদিকে জানা গেছে, ফ্লাড লাইটের আলোতে গোলাপী বলে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত ম্যাচ অনুশীলন না করেই আর একটি ডে-নাইট টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয় বিসিবি। আর বর্তমান সময়সূচি অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু বিপিএল-২০১৯ আগামী ১৭ জানুয়ারি শেষ হওয়ায় গোলাপী বলের ক্রিকেটের জন্য জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে সময়ও পাবে না।

কেননা, শিডিউল অনুযায়ী, পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুই হবে আগামী ২৩ জানুয়ারি। অর্থাৎ- গত মাসে ভারতের বিপক্ষে কোনও ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই যেমন নিজেদের প্রথম গোলাপি টেস্ট খেলতে মাঠে নেমেছিল, তেমন এবারও বাংলাদেশ দলকে কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই নামতে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষেও। যেটা একেবারেই চাইছে না বিসিবি। সুতরাং পাকিস্তান সফরে সহসাই দিবারাত্রির টেস্ট হচ্ছে না- সেটাই বলাই বাহুল্য। সূত্র- ক্রিকইনফো।

এনএস/