নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ ভারতীয় সাবেক কর্মকর্তাদের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ বুধবার
হর্ষ মন্দার ও শশীকান্ত সেন্থিল
নরেন্দ্র মোদী সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠেছে ভারতীয় নাগরিকদের মধ্য থেকে। কেউ ডাক দিচ্ছেন ‘সত্যাগ্রহ’-র। কেউ ‘আইন অমান্য আন্দোলন’-এর। টুইটারে ‘সিএবি-এনআরসি সত্যাগ্রহ’, ‘নো টু সিএবি-এআরসি’ হ্যাশট্যাগের ছড়াছড়ি।
এত দিন এই বিলের প্রতিবাদ হচ্ছিল ভারতের রাজনৈতিক স্তরে। ইতিমধ্যে ৬২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকও বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এবার এই বিলের বিপক্ষে নেমেছেন ভারতীয় সরকারের সাবেক আমলারা। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ফলে মুসলিমরাই হেনস্থার শিকার হবেন বলে অভিযোগ করছেন সাবেক এই কর্মকর্তারা।
সদ্য আইএএস-এর চাকরি ছেড়ে দেওয়া শশীকান্ত সেন্থিলের সিদ্ধান্ত এনআরসি হলে তিনি কোন নথি জমা দেবেন না। সত্যাগ্রহের ডাক দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি নাগরিক নই বলে ঘোষণা করা হলে ডিটেনশন সেন্টারে যাব।’ সাবেক আইএএস অফিসার হর্ষ মন্দার বলেছেন, ‘প্রয়োজন হলে আমিও মুসলিম হয়ে যাব’।
শশীকান্ত সেন্থিলের মতোই কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পরে আইএএস হিসেবে পদত্যাগ করেছিলেন কান্নন গোপীনাথন। সেই গোপীনাথন সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসি’র বিরুদ্ধে মুসলিমদের উদ্দেশে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিলটা অমানবিক ও অসাংবিধানিক। তাই সরকারি নীতিতে আক্রান্ত হলে মুসলিমদের প্রতিবাদ করার সব অধিকার রয়েছে।
গুজরাট দাঙ্গার পরে চাকরি ছেড়ে দেওয়া হর্ষ মন্দার আজ বলেছেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পরে আইন অমান্য করতে মুসলিম হিসেবে নাম নথিভুক্ত করাব। তারপরে এনআরসি-তে নথি জমা দিতে অস্বীকার করবো। নথির অভাবে নাগরিকত্ব চলে যাওয়া মুসলিমদের যে শাস্তি হবে, ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে, আমাকে সেই শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি তুলব।’
প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তী। তিনি টুইটারে নিজেকে ‘মুসলিম’ ঘোষণা করে বলেছেন, ‘আমি মুসলিম। ভারতেই আমার জন্ম। আমি ফাতিহা জানি, গায়ত্রীমন্ত্রও জানি। কারণ আমার জন্ম ভারতে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দী বলেছেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতের উপরে নীতিগত আঘাত। কিন্তু এনআরসি রোজকার জীবনে বিপজ্জনক।’
এএইচ/