রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণে একটা শব্দও করেনি সুচি: গাম্বিয়া
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৯ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
মিয়ানমারের সামরিক আদালত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ করেছে গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার পক্ষের আইনজীবী ফিলিপে স্যান্ডস কিউসি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা নারীদের ওপর যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের বিষয়ে আপনি নিরব ছিলেন। আপনার নীরবতাই কথার চেয়ে অনেক বেশি কিছু বলে দিচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
তিনি বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা এক মামলার তৃতীয় দিনের শুনানিতে এই কথা বলেন। স্যান্ডস বলেন, মিয়ানমারের নারী ও মেয়েদের ওপর যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের বিষয়ে একটা শব্দও বলেননি (অং সান সু চি)। ম্যাডাম এজেন্ট (আইসিজে-তে সু চির পদমর্যাদা) আপনার নীরবতা কথার চেয়ে অনেক বেশি কিছু বলে দিচ্ছে।
গাম্বিয়ার পক্ষে আরেক মার্কিন আইনজীবী পল রাইখলার ট্রাইব্যুনালকে বলেছেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তদন্তে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং-সহ শীর্ষ ছয় সেনা কর্মকর্তা গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। তাদের ফৌজদারি অপরাধের দায়ে বিচারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তাই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে বিচারের ভার তুলে দেওয়া যায় না।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের শুনানিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, রাখাইনে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। শুনানির তৃতীয় দিনে মামলার বাদী গাম্বিয়া সেখানে সংঘটিত নারী নিপীড়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছে, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ কি সন্ত্রাস মোকাবিলার পথ?
গত মঙ্গলবার বিচার প্রক্রিয়ার প্রথম দিনে বাদীপক্ষের অভিযোগ শোনা হয়। দ্বিতীয় দিনে মিয়ানমারের হয়ে কথা বলেন সু চি। শুনানির শেষ দিনে (১২ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় দেড়ঘণ্টা বলার সুযোগ পায় গাম্বিয়া। বিরতির পর রাত সাড়ে ৯টা থেকে দেড়ঘণ্টা নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবে মিয়ানমার।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগে কয়েকজন সেনা সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল শুরুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ২৬ নভেম্বর নিজস্ব আদালতে এই কথিত বিচার শুরু করেছে তারা। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে এই বিচার শুরু করে দেশটি। এর আগে মিয়ানমারের ইন ডিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার দায়ে ৭ সেনা সদস্যকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও এক বছরেরও কম সময় কারাভোগের পর গত নভেম্বরে তারা মুক্তি পায়।
আরকে//