রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র
এলসিতে ০.২০ শতাংশ কমিশন চায় সোনালী ব্যাংক
আসিফ শওকত কল্লোল
প্রকাশিত : ১১:০৪ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৩:০৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার
সরকারের মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৯৪ হাজার কোটি টাকার ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে প্রতি তিন মাসে সোনালী ব্যাংক কমিশন চাচ্ছে শতকরা ২০ পয়সা। বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন সেই কমিশন দিতে গড়িমড়ি করছে। এর আগে সোনালী ব্যাংক রুপপুর পারমাণবিক ঋণপত্র খোলার জন্য প্রতি তিন মাসে শতকরা ৪০ পয়সা চাইলেও শক্তি কমিশন প্রথমে শতকরা ৯ পয়সা ও পরবর্তীতে শতকরা ৫ পয়সা হারে কমিশন দেওয়ার প্রস্তাব করে।
গত সপ্তাহে সোনালী ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আতাউর রহমান প্রধান মোঃ আতাউর রহমান প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এ ব্যাংক স্থাপিত ঋণপত্রের বিপরীতে প্রাপ্য কমিশন প্রতি কোয়ার্টার শতকরা ৪০ পয়সা এর স্থলে ন্যূনতম শতকরা ২০ পয়সা হারে পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছে।
চিঠিতে সোনালী ব্যাংকের সিইও আরো বলেছে, জানুয়ারী মাসে শক্তি কমিশনের সাথে এক সভায় সোনালী ব্যাংককে দুই ধাপে ২০ কোটি টাকা কমিশন পরিশোধের সিদ্বান্ত থাকলেও এখন পর্ষন্ত কমিশন সেই অর্থ প্রদান করেনি। সোনালী ব্যাংকের সিইও বলছেন ঋণপত্রের কমিশন দিয়েই সোনালী ব্যাংকের বেশি আয় হয়ে থাকে । ঋণপত্র খোলার কমিশন কমে যাচ্ছে আর অন্যদিকে সাতটি কারণ তার মধ্যে রয়েছে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় নামমাত্র মাশুল অথবা বিনামাশুলে দেশের জনগণকে ৫১ টি সেবা প্রদান এবং বিপিসি , বিজিএমসি ও ওরিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য এ ব্যাংক থেকে গৃহীত ঋণের বিপরীতে ৫ থেকে ৭ শতাংশ সুদে দীর্ঘ মেয়াদী বন্ড ইস্যু ফলে সোনালী ব্যাংকের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এছাড়া বিনা মাশুলে চেষ্ট /সাবচেষ্ট পরিচালনা . জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরোর অধীনে রেয়াতী কমিশনে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র ইস্যু। সামরিক ও বেসামরিক পেনশনারদের পেনশন প্রদান, রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে স্থাপিত আমদানি ঋণপত্রের মূল্য যথাসময়ে পরিশোধের ক্ষেত্রে অধিক মূল্যে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করে পরিশোধ করা । ফরেন রেমিটেন্স বিতরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাশুল না নেওয়া জন্য নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যাংকটির আয়ের ওপর ।
এদিকে সোনালী ব্যাংকের সাথে সংশ্লিষ্ট চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ পরমাণু প্রকল্পের মোট মূল্যেও ১০ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধের বিধান থাকায় উক্ত চুক্তির আওতায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ১৪ টি কিস্তির বিপরীতে এ পর্ষন্ত ৫৭১ দশমিক ৮৪৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলার বা ৪৮ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে । ২০২৪ সালের মধ্যে অবশিষ্ট ১৮ টি কিস্তির বিপরিতে ৬৯৩ দশমিক ১৫৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলার বা ৫৮ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে ।
এদিকে এ ব্যাংক প্রয়োজনীয় পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল না থাকায় দেশের প্রতিশ্রুতি বা সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য অগ্রিম হিসেবে পরিশোধিত উক্ত ৫৭১ দশমিক ৮৪৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলারের বা ৪৮ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা মধ্যে ৩৪২ দশমিক ৮৪৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলার আন্তঃ ব্যাংক বাজার বা বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে বেশি দরে মার্কিন ডলার ক্রয় করার জন্য ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা । পরবর্তী ৬৯৩ দশমিক ১৫৫ মিলিয়ান মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে সোনালী ব্যাংক এক্সচেঞ্জ ক্ষতির পরিমাণ বিপুল হবে । বাৎসরিক এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা।
গত বছর সোনালী ব্যাংক ৫শ কোটি টাকার লোকসান কাটিয়ে ১২শ কোটি টাকার মুনাফা করেছে।
আরকে//