আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলে হারাতে হবে মন্ত্রীত্ব
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার
বাংলাদশ আওয়ামী লীগ
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে দলটি। সম্মেলনকে ঘিরে ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং দলীয় কার্যালয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর।
সেখানে ভিড় করা নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে দলটির পরবর্তী নেতৃত্বে কে আসছেন। বিশেষ করে দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন সেটা নিয়েই আলোচনা চলছে জোরেশোরেই।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড এবার দলকে সরকার থেকে কার্যকরভাবে পৃথক করার উদ্যোগ নিয়েছে। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা তেমনটাই।
শেখ হাসিনার ইচ্ছা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হবে সার্বক্ষনিক। অর্থাৎ দলের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির একমাত্র পেশা, পরিচয় ও কাজ হবে শুধুই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সে অনুযায়ী, এখন যদি কোনও মন্ত্রীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাহলে তাকে মন্ত্রীত্ব ছাড়তে হবে। তাইতো পদপ্রত্যাশী ও পদে থাকা নেতারা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।
কেননা, সে ক্ষেত্রে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের হারাতে হতে পারে বর্তমান দলীয় পদ। মন্ত্রীপরিষদে নেই, এমন নেতাদের দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে আওয়ামী লীগকে। এতে যারা সরকারে নেই তাদের ভাগ্য খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারাই পাবেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদ। গণভবন সূত্র ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ঠিক রেখে কে আসতে পারেন বাকি নেতৃত্বে -এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আওয়ামী লীগের ভেতর-বাইরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সাধারণ সম্পাদক পদ।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী। এ পদে ওবায়দুল কাদের অথবা তার পরিবর্তে যেই আসুন না কেন, তিনি মন্ত্রিপরিষদে থাকতে পারবেন না—এমন পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ মহলের। সাধারণ সম্পাদক যেন দলের নেতাকর্মীদের জন্য সার্বক্ষণিক সময় দিতে পারেন—এই ভাবনা থেকেই পরিকল্পনাটি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী সংসদে এবার ব্যাপক রদবদল আনা হবে। কালিমালিপ্তদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নেতৃত্বে আনা হবে।
বারবার অবসরের ঘোষণা দিলেও নেতাকর্মীদের দাবির মুখে দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা। এবারও তিনিই দলের সভাপতি থাকছেন তা নিশ্চিত।
আওয়ামী লীগে দ্বিতীয় শীর্ষপদ সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি পদে শেখ হাসিনার আসাটা একরকম নিশ্চিত হলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে রয়েছে জল্পনা। আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে দলের সবস্তরে এখন আলোচনা সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন তা নিয়ে।
এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলীয় সাধারণ সম্পাদককে সরকারের বাইরে রাখার একটি পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা আছে অনেক আগে থেকে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেয়ার পরিকল্পনা আছে। দল ও সরকার আলাদা করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদে রদবদল আসার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এই পদে আনা হতে পারে সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন একজনকে, যিনি সরকারে নেই।
তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাঝে বড় ধরনের অসুস্থতার ধকল কাটিয়ে এখন তিনি অনেকটাই স্বাভাবিক। আবারও তার এ পদে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এনএস/