এনআরসিতে বাদ পড়ার শঙ্কায় ভারতে বিভিন্ন সংগঠনের সতর্কবার্তা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার
হায়দরাবাদ থেকে কলকাতা, মুম্বই থেকে বেঙ্গালুরু, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠন ও আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এনআরসিতে বাদ পড়ার আশঙ্কায় সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
এনআরসিতে আসামে ১৯ লাখ মানুষ বাদ পড়ার পর থেকেই সরব হয়ে উঠেছে এসব সংগঠন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নানা আশ্বাসেও চিরা ভেঁজেনি এসব মানুষদের। ফলে, সীমান্ত পারি দিয়ে অনেকে প্রতিবেশী দেশে পারি দিচ্ছেন। তবে, সেটা এখনো অন্তিম পর্যায়ে যায়নি। শুধু আসামে নয়, এনআরসির ঘোষণা দিয়েছে ভারতজুড়ে। ফলে, নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে বেশ হুমকির মুখে ভারতীয় সংখ্যালঘুরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা দেশজুড়ে হবে এনআরসি। দেশটির উচ্চ কক্ষে পাশের পর আইনে পরিণত হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। অমিত শাহের আশ্বাস, ভারতীয় মুসলমানদের এতে ভয়ের কিছু নেই। তবুও আশঙ্কায় সংখ্যালঘুরা।
নথি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সঠিক রাখার জন্য প্রতি শুক্রবার নামাজ শেষে সতর্ক করা হচ্ছে মসজিদের তরফে। এমনকি এই সহায়তার জন্য বিভিন্ন সংগঠনের তরফে শিবিরও চালু করা হয়েছে। সতর্কতামূলক নির্দেশ সোশাল মিডিয়াতেও ছাড়া হয়েছে। নাগরিকত্বের বিভিন্ন নথিতে যাতে তথ্য একই থাকে সে জন্য ‘গাইডবুক’ও বিতরণ করা হয়েছে।
হায়দরাবাদ থেকে কলকাতা, মুম্বই থেকে বেঙ্গালুরু, সর্বত্র মসজিদ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠন, আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এই সতর্কতা অভিযান চালানো হচ্ছে। আসামে এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষেরও বেশি মানুষের নাম।
শিবিরের উদ্যোক্তাদের দাবি, নথিতে ভুল থাকার কারণে তালিকা থেকে বহু মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিুয়েই এই আয়োজন। বেঙ্গালুরুর জামিয়া মিলিয়া মসজিদের ইমাম ইমরান মাসুদ বলেন, ‘গত তিন মাস ধরেই আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নথিতে থাকা ভুল ঠিক করার কথা বলে আসছি।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে, কর্নাটকে প্রায় ১,৮০০ মসজিদ রয়েছে। শুক্রবারের নামাজ শেষে প্রতিটি মসজিদের তরফে পূণ্যার্থীদের সতর্ক করা হচ্ছে।
শহরের ফ্রেজার ঠাউন এলাকার এক মসজিদের সম্পাদক সুহেল আহমেদ বলেন, ‘প্যান ও আধার কার্ড যেসব মুসলিমদের নেই তাদের এই ধরনের শিবিরের মাধ্যমে পরিচয়পত্র করে দেওয়ার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ হাজার ফর্ম বিতরণ করা হয়েছে।’
একই সঙ্গে অকারণে হয়রানি কমাতে সবাইকে তাদের সার্ভিস রেকর্ড রাখতে বলা হয়েছে। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে এনআরসির কথা স্পষ্ট করতেই তৎপরতা আরও বেড়েছে।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের তরফ থেকে বলা হয়েছে, দক্ষিণ মুম্বইয়ের নানা জায়গায় এই ধরনের শিবির করা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। হায়দরাবাদেও এক দল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই কাজ করে চলেছে। বাংলাতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন।
তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, ‘বাংলায় এই নয়া আইন ও এনআরসি করতে দেয়া হবে না।’
তবে তারও বার্তা, ‘পরিচয়পত্রের নথি সঠিকভাবে রাখতে হবে। হারিয়ে গেলে তা পুলিশকে জানাতে হবে ও নতুন করে আবেদন করতে হবে। নিজেদের স্বার্থেই এই কাজ করতে হবে।’
এআই/