মুশফিক ঝড়ে উড়ে গেল রাজশাহী
নাজমুশ শাহাদাৎ
প্রকাশিত : ০৫:২১ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার
মুশফিকুর রহিম
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ গড়েও জিততে পারলো না রাজশাহী। এক মুশফিকের অনবদ্য ব্যাটিং ঝড়েই উড়ে গেছে দুর্দান্ত রয়্যালসরা। মাত্র ৪ রানের জন্য শতক না পেলেও পাঁচ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা অধিনায়কের দল।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রথমে ব্যাট করে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে রাজশাহী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট হারালেও মুশফিকের ঝড়ো ফিফটিতে ৫ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় খুলনা টাইগার্স।
বড় এ জয়ের পথে তিনে নামা রেইলি রুশো ৪২ রান করে আউট হলেও দলের ভরসার প্রতীক হয়ে ফিফটি তুলে নেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দলের জয়ের জন্য যখন ৪ বল থেকে মাত্র ২ রান প্রয়োজন, তখন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেতে দরকার মাত্র ৪ রান।
এ অবস্থায় চার হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দিয়ে আক্ষপে পোড়েন মুশফিকুর। তবে দলের জয়ের নায়ক হতে পেরেই মুশি বেশ খুশি। আউট হওয়ার আগে এই ফর্মেটে ক্যারিয়ারসেরা ৯৬ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলেন মুশফিক। ৫১ বলের এই অনবদ্য এ ইনিংসে ছিল নয়টি চার ও চারটি ছক্কার মার।
এছাড়া শামসুর রহমান শুভ করেন ২০ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২৯ রান। আর ম্যাচ জয়ী শট খেলা রবি ফ্রাইলিংক অপরাজিত থাকেন ছয় বলে একটি করে চার-ছয়ে ১৪ রান নিয়ে।
এর আগে জবাব দিতে নেমে দলীয় ১ রানেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার নাজমুল হোসাইন শান্ত (০)। পরে রুশো এসে রহমানুল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে জুটি বাঁধলেও আফগান ওপেনারকে মাত্র ৭ রানেই ফেরান আফিফ হোসাইন। ফলে ২৫ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় খুলনা। সেই অবস্থা থেকে দলকে উদ্ধার করার পাশাপাশি জয়ের লক্ষ্যে ছুটতে শুরু করেন মুশফিক ও রুশো।
এদিন রাজশাহী রয়্যালসের ইনিংসের ১৮তম ওভার শেষে ৮৬ রানে অপরাজিত ছিলেন শোয়েব মালিক। যেভাবে খেলছিলেন তাতে চলতি বিপিএলের সর্বোচ্চ সংগ্রহটাকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করার ভালো সুযোগই ছিল সাবেক পাকিস্তান অধিনায়কের। কিন্তু পারলেন না। পরের ওভারে ফিরেছেন আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ আমিরের বলে। তবে ফেরার আগে রাজশাহীকে শক্ত একটা সংগ্রহ এনে দিয়ে গেছেন মালিক।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ গড়েছে রাজশাহী। চলতি বিপিএলে যা সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ঢাকা প্লাটুনের দখলে। ঢাকা পর্বে সিলেট থান্ডার্সের বিপক্ষে চার উইকেটে ১৮২ রান তুলেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
আজ রাজশাহীর শোয়েব মালিক শেষ পর্যন্ত ৫০ বল খেলে ৮ চার ৪ ছয়ে ৮৭ রান করেছেন। রাজশাহীর বড় সংগ্রহ দারুণ অবদান রবি বোপারারও। পাঁচে নেমে ২৬ বলে ২টি করে চার ছয়ে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেল ৬ বলে করেন ১৩ রান।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি পদ্মাপাড়ের দলটির। মোহাম্মদ আমিরের দুর্দান্ত এক বল বুঝে উঠতে না পেরে হযরতুল্লাহ জাজাই ফিরেছেন ১ রান করে। আগের কয়েকটা ম্যাচ দারুণ ব্যাটিং করা লিটন কুমার দাসও খুব বেশিদূর এগুতে পারেননি (১৬ বলে ১৯ রান)।
তবে চতুর্থ উইকেটে শোয়েব মালিক ও রবি বোপারা শুরুর দুঃখটা ভুলিয়ে দিয়েছেন দারুণভাবে। চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটি ছিল ১০৬ রানের। এরপর মালিক ফিরে গেলেও রাসেলকে নিয়ে রাজশাহীকে দারুণভাবে টেনেছেন বোপারা।
চট্টগ্রামের হয়ে দুটি উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ আমির। তবে ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়েছেন পাকিস্তানি পেসার।
এনএস/