ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

সোহান ঝড়ে তছনছ সিলেটের স্বপ্ন

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ১০:৩৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৪৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

সিলেট-চট্টগ্রাম ম্যাচের শেষ দিকের একটি মুহুর্ত

সিলেট-চট্টগ্রাম ম্যাচের শেষ দিকের একটি মুহুর্ত

মঙ্গলবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মাত্র ১২৯ রানের সংগ্রহ গড়ে সিলেট থান্ডার্স। জবাব দিতে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে ৮৫ রানেই ৬ উইকেট চট্টগ্রাম হারিয়ে ধুঁকতে থাকলে প্রথম জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে সিলেট। কিন্তু সোহান ঝড়ে তছনছ হয়ে যায় তাদের সে স্বপ্ন।

তিনটি ছক্কা আর দুটি চারে ২৪ বলে ৩৭ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন নুরুল হাসান সোহান। অথচ এই সোহানের জন্যই রান আউট হয়ে ফিরতে হয় এক হাতে দলের স্কোরকে টেনে নিয়ে যাওয়া লেন্ডল সিমন্সকে। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন সিলেটের এই ওপেনার। যার মধ্যে ছিল তিনটি করে চার-ছক্কার মার।

সিমন্সের আউটে সিলেট তো রীতিমত নিজেদের প্রথম জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে। তবে সেই অবস্থা থেকে পর পর দুই ছক্কা মেরে জেকে বসা চাপ কমিয়ে ফেলেন সোহান। দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। অবশ্য এসময়ে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ক্যারিবিয় রিক্রুট কেসরিক উইলিয়ামস। ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করা উইলিয়ামস অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে দুই ছক্কা আর এক চারে ১৮ রান করে। 

সিলেটের পক্ষে চট্টগ্রামকে বেশি ভোগান আরেক ক্যারিবিয় রিক্রুট ক্রিসমার স্যান্টোকি। মাত্র ১৩ রানে ৩টি উইকেট তুলে নেন তিনি। এছাড়া এবাদত ও দেলোয়ার পান একটি করে উইকেট। 

বড় তারকা না থাকলেও মাঝারি মানের তারকাদের নিয়ে সিলেট থান্ডার্স দলটা বেশ ব্যালেন্সই বলা যায়। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে তার ছিটেফোটা প্রমাণ নেই। ঢাকা পর্বের তিন ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে সিলেট। আজ চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেও সুবিধা করতে পারল না। 

এদিন টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় দলটি। ২৩ রানের মধ্যে ফিরে যান রনি তালুকদার (২) ও শফিকুল্লাহ (৬)। এরপর আন্দ্রে ফ্লেচার, মোহাম্মদ মিঠুন দাঁড়াতে চাইলেও পারেননি। ৫৯ রানের মধ্যে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে বসে সিলেট। বড় স্কোর যে গড়া হচ্ছে না সেটা তখনই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়।

সিলেটের এমন বিপর্যয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন স্বাগতিক দলের পেসার মেহেদী হাসান রানা। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে বাঁহাতি এই পেসার একাই তুলে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। রান দিয়েছেন মাত্র ২৩টি, যার ২১টিই দিয়েছেন শেষের দুই ওভারে। চাঁদপুরের তরুণ এই পেসারের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়েই মূলত বিধ্বস্ত হয়েছে সিলেট। দিনশেষে ম্যাচ সেরাও হন রানা। 

বাঁহাতি এই পেসারের দুর্দান্ত পেসে একে একে ধরাশায়ী হয়েছেন ওপেনার রনি তালুকদার (২), মোহাম্মদ মিঠুন (১৫), জনসন চার্লস (৩) ও ক্রিসমার স্যান্টোকি (৯)। এছাড়া জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের ঝুলিতে গেছে শফিকুল্লাহ শাফাক (৬) ও নাঈম হাসানের (১১) উইকেট। 

বাকি দুটি উইকেটের মধ্যে আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৩৮) তুলে নেন মুক্তার আলী এবং অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে (৩০) তুলে নেন কেসরিক উইলিয়ামস। সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন ইনিংসের সর্বোচ্চ এই দুই রান সংগ্রাহক।

এদিকে, নিজেদের তিন ম্যচের তিনটিতে হেরেও পয়েন্ট টেবিলে নিচ থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিলেট। তাই জয়ের মুখ দেখতে মরিয়া মোসাদ্দেক বাহিনী। অন্যদিকে তিন ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়ে পয়েন্ট টেবিলে চার নম্বরে আছে চট্টগ্রাম। 

এর আগে, দিনের প্রথম ম্যাচে মুশফিকুর রহীমের ৫১ বলে ৯৬ রানের ইংনিসে ভর করে রাজশাহীকে উড়িয়ে দিয়েছে খুলনা।

এদিকে, আজকের এই দুই ম্যাচ শেষ চার ম্যাচে তিন জয় ও এক পরাজয়ে ছয় পয়েন্ট অর্জন করে শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে মাহমুদুল্লাহর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতে দুইয়ে অবস্থান করছে মুশফিকের খুলনা।  

এনএস/