ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

১৮ ডিসেম্বর : রাজবাড়ী মুক্ত দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ বুধবার

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। তবে দেশের বিভিন্ন জেলা স্বাধীনতার উল্লাসে মেতে উঠলেও রাজবাড়ী মুক্ত হয় ১৮ ডিসেম্বর। কারণ এখানে বিহারী, পাকিস্তানী বাহিনী ও রাজাকারা এক হয়ে যুদ্ধ অংশ নেয়। এ সময় অবাঙালি বিহারীরা অতিমাত্রায় তৎপর হয়ে ওঠে। পুরো শহর তারা দখল করে রাখে।

৯ ডিসেম্বর শহরের লক্ষ্মীকোল এলাকায় বিহারীদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বিহারীদের গুলিতে সেদিন শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা রফিক, শফিক ও সাদিক।

১৩ ডিসেম্বর বিহারিরা শহরের বিনোদপুর বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের প্রহরীকে হত্যা করে। ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশে পাকিস্তানিবাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনও অবাঙালি বিহারীদের দখলে। তারা ঘোষণা দেয়, সারাদেশ বাংলাদেশ হলেও রাজবাড়ী পাকিস্তান হয়ে থাকবে।

এ সময় জেলার সব অঞ্চল থেকে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন দল রাজবাড়ীতে যুদ্ধের উদ্দেশে সংগঠিত হতে থাকে। ইতোমধ্যে শহিদুন্নবী আলম, ইলিয়াস মিয়া, সিরাজ আহম্মেদ, আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, রফিকুল ইসলামের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিকে ঘিরে রাখে। এদের সঙ্গে জেলার পাংশা থেকে জিল্লুল হাকিম, আব্দুল মতিন, নাসিরুল হক সাবু, আব্দুল মালেক, সাচ্চু, আব্দুর রব তাদের দল নিয়ে যুদ্ধে যোগদান করেন।

বিহারীরা শহরের রেল লাইনের উত্তর পাশে অবস্থান নেয়। তারা রেলওয়ে লোকোসেড থেকে ড্রাই আইস ফ্যাক্টরি পর্যন্ত রেলের মালগাড়ী দিয়ে বাধা তৈরি করে।

মুক্তিবাহিনী শহরের দক্ষিণ দিক থেকে গুলি চালাতে থাকে। তবে মালগাড়ী থাকার কারণে তারা বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারছিলনা। সে সময় গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান আবি মাগুরার শ্রীপুর থেকে মর্টার আনেন। ওই মর্টার দিয়ে গুলি ছুড়লে বিহারীরা পিছু হটে। পরাজয় অনিবার্য মনে করে বিহারীরা আত্মসমর্পণ করার উদ্দেশে ফরিদপুর অভিমুখে যেতে থাকে। তবে তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সে সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রায় শতাধিক বিহারি নিহত হয়।

ওই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা দিয়ানত আলী শহীদ হন এবং ইলিয়াস হোসেন গুরুতর আহত হন। ১৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় রাজবাড়ী।

এসএ/