ও শ্যাম রেঙ্গুন ন যাইও রে…
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:২৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার
চট্টগ্রামের জনপ্রিয় একটি আঞ্চলিক গান, ‘ও শ্যাম রেঙ্গুন ন যাইও রে, কনে খাইব রেঙ্গুনের কামাই রে’। গানটির গীতিকার-সুরকার আবদুল গফুর হালী।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের প্রাক্তন রাজধানী যা পূর্বে রেঙ্গুন নামে পরিচিত ছিলো। ধারণা করা হয় প্রাক্তন রেঙ্গুন নামটি রাখাইন উচ্চারণ রঙ্গুঁ থেকে আসে । ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি মিয়ানমারের রাজধানী ছিলো। পরবর্তীকালে প্রশাসনিক কাজগুলো সহজ করার উদ্দেশ্যে-নির্মিত শহর নাইপিদোতে রাজধানী স্থানান্তরিত করে। ৭০ লাখেরও বেশি লোক নিয়ে ইয়াঙ্গুন হল মিয়ানমারের সবচেয়ে জনবহুল শহর এবং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র।
আজকের বাংলাদেশ এবং ভারতের অসংখ্য মানুষ এক সময় আরাকানে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য করতে যেত। সেখানে গিয়ে অনেকেই বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করত। অনেকেই আর দেশে ফিরে আসতো না। তাদের আত্মীয়-স্বজনরা দিনের পর দিন অপেক্ষায় থাকত। কিন্তু তাদের দেখা পেত না।
এরকম অনেক স্বজন হারানোর বেদনা আছে চট্টগ্রামে, যাদের বাবা-দাদা আর কখনোই ফিরে আসেননি।
বর্তমানে লুইজিয়ানা লাফায়েত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান ও সহকারী গবেষক হিসেবে কাজ করছেন চট্টগ্রামের দেলওয়ার হোসেন। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে থিসিস করছেন রোহিঙ্গাদের নিয়ে। সেটা করতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস। এ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসি দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন-
‘আজকের বাংলাদেশ আর ভারতের অসংখ্য মানুষ আরাকানে গিয়েছেন ব্রিটিশ পিরয়ডে বা তারও আগে। গীতিকার-সুরকার আবদুল গফুর হালীর দাদা রেঙ্গুন গিয়ে আর দেশে ফিরে আসেননি। পরবর্তীকালে গফুর হালীর দাদাকে খুঁজতে যান গফুর হালীর বাবা। পরে তিনিও আর দেশে তার পরিবারের কাছে ফিরে আসেননি। রেঙ্গুনের যাদুতে আটকা পড়েন তারা আরো অসংখ্য মানুষের মতো। গফুর হালী তার দাদী-মা এর মতো স্বামীর বিচ্ছেদে জ্বালা অনেক পরিচিত নারীর তীব্র কষ্ট দেখেছেন ছোট বেলা থেকেই। তাই সেসসময়ে রেঙ্গুনগামী পুরুষের জন্য নারীর চিরন্তন হাহাকার ফুটে উঠেছে গফুর হালীর এই গানে। সেই গান এখনও ছুঁয়ে যায় প্রবাসের কারণে বিচ্ছেদে থাকা প্রতিটি সংবেদনশীল মানুষের মন।’
একে//