মুস্তাফিজ তোপে বিপাকে খুলনা
নাজমুশ শাহাদাৎ
প্রকাশিত : ০৭:৪১ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৫৬ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
সাজঘরে ফেরার পথে শান্ত
চট্টগ্রাম পর্ব শেষে আজ (শুক্রবার) থেকে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে শুরু হয়ে গেছে ঢাকার দ্বিতীয় পর্ব। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যায় মুখোমুখি খুলনা টাইগার্স ও রংপুর রেঞ্জার্স। যে ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা করেও মুস্তাফিজের বোলিং তোপে ২৩ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে খুলনা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান সংগ্রহ করেছে খুলনা। মুশফিকুর রহিম ১৭ রানে ক্রিজে আছেন। নাজমুল হোসাইন শান্ত আউট হন ২২ বলে ৩০ রান করে।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচটিতে টস হেরে ব্যাট করতে নামে মুশফিকের দল। ওপেনার হিসেবে শান্তর সঙ্গে নেমে শুরুতেই ঝড় তোলেন মিরাজ। কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাত্র ১০ বলেই তুলে ফেলেন ২৩ রান। কিন্তু এরপরেই মুস্তাফিজের তোপের মুখে পড়ে খুলনা।
আগের ম্যাচেই স্বরুপে ফেরা টাইগার তারকার কাটারে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিরাজ। ৭ বলে তিন চারে ১২ করে আউট হন মিরাজ। তার ফেরার পরের বলেই মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হন খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রাইলি রুশো। এবারের আসরে প্রথমবারের মতো কোনও রান না করেই ওয়াটসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় এই প্রোটিয়াকে। যাতে ২৩ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় খুলনা।
এরপর শান্তর সঙ্গে ২২ রান যোগ করে রংপুরের আগের ম্যাচের নায়ক গ্রেগরির শিকার হন চারে নামা শামসুর রহমান। ফেরার সময় তার নামের পাশে যুক্ত হয় ১২ বলে ১৩ রান। একটি করে ছক্কা ও চার হাঁকান তিনি। যাতে ৪৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় খুলনা।
আজকের এ ম্যাচ দিয়ে আবারও জয়ের ধারায় ফিরতে চায় মুশফিকের খুলনা। অন্যদিকে চট্টগ্রামের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ নেয়া রংপুর এবার ঢাকায় নিতে চায় তাদের প্রথম জয়ের স্বাদ। আজ দলটির পক্ষে মাঠে নেমেছেন শেন ওয়াটসন। নেতৃত্বও দিচ্ছেন এই অজি তারকা।
এদিকে, চলতি আসরে খুলনার শুরুটা ছিলো দুর্দান্ত। প্রথম তিন ম্যাচেই জয় তুলে নেয় সুন্দরবন অঞ্চলের দলটি। এরমধ্যে একটি ছিলো ঢাকার মাটিতে। শক্তিশালী চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলো মুশফিক বাহিনী। এরপর চট্টগ্রামের মাটিতে রাজশাহী রয়্যালসকে ও রংপুর রেঞ্জার্সকে হারায় খুলনা। ফলে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ নিয়ে ফুরফুরে মেজাজেই ছিলো মুশফিক এন্ড কোং।
কিন্তু চট্টগ্রাম পর্বের শেষটায় গিয়েই যেন সব তালগোল পাকিয়ে ফেললো তারা। যাতে মোটেও ভালো হয়নি খুলনার ফলাফল। শেষ দু’ম্যাচেই হারে তারা। রংপুর রেঞ্জার্স ও সিলেট থান্ডার্সের কাছে হারে দলটি। ফলে উড়ন্ত শুরুর পরও, স্বস্তি নেই খুলনার। ৫ ম্যাচে ৩ জয় ও ২ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে চতুর্থ স্থানে থাকলেও দুই পয়েন্ট কম নিয়ে খুলনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কুমিল্লা।
অন্যদিকে, এবারের আসরে রংপুর রেঞ্জার্সের শুরুটা ছিলো চরম হতাশার। প্রথম চার ম্যাচের সবক’টিতেই হারে তারা। এরমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সমান ২টি করে ম্যাচ হারে রংপুর। অবশেষে চট্টগ্রামে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয়ের দেখা পায় ডেফেন্ডিং চ্যম্পিয়নরা। খুলনাকে ৭ উইকেটে হারায় দলটি।
আর রংপুরের হারগুলো ছিলো- চট্টগ্রাম-রাজশাহী-খুলনা ও সিলেটের কাছে। যাতে ৫ ম্যাচে ১ জয় ও ৪ হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে রয়েছে রংপুর।
রংপুরের পক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারছেন না দলের ব্যাটসম্যানরা। যা রান করেছেন এক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখের। ৫ ইনিংসে ১টি মাত্র ফিফটিতে ১৫৬ রান রয়েছে নাঈমের। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ইংল্যান্ডের লুইস গ্রেগরির। ৫ ইনিংসে ১টি ফিফটিতে ১৩০ রান করেছেন তিনি। তার ফিফটিটি এসেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে।
গ্রেগরির ৩৭ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৬ রান এবারের আসরে রংপুরকে প্রথম জয়ের স্বাদ দেয়। আর বল হাতেও দলের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী সেই গ্রেগরিই। ৪ ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
খুলনা টাইগার্স একাদশ:
নাজমুল হোসাইন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), রাইলি রুশো, শামসুর রহমান, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, নাজিবুল্লাহ জাদরান, তানভীর ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মোহাম্মাদ আমির, শহিদুল ইসলাম।
রংপুর রেঞ্জার্স একাদশ:
মোহাম্মদ নাঈম শেখ, শেন ওয়াটসন (অধিনায়ক), ক্যামেরন ডেলপোর্ট, লুইস গ্রেগরি, জহুরুল ইসলাম, ফজলে মাহমুদ, মোহাম্মদ নবি, মুস্তাফিজুর রহমান, সঞ্জিত সাহা, মুকিদুল ইসলাম।
এনএস/