যে কারণে বনলতার বগি চলে যায় নীলসাগরে
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:১৭ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার
![](https://www.ekushey-tv.com/media/imgAll/2019December/Rajshahi-pic-1912280417.jpg)
রাজশাহী-ঢাকা রুটের একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের অত্যাধুনিক বগিগুলো চলে গেছে চিলাহাটি। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) নীলফামারীর চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের জন্য বনলতার বগিগুলো পাঠিয়ে দেয়া হয়। আট মাস আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা আধুনিক বগি দিয়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ট্রেনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগুলোই বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে সর্বাধুনিক বগি।
ইন্দোনেশিয়ার তৈরি নতুন এই বগিগুলোতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র রেললাইনের ওপরে পড়ে না। রয়েছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াই-ফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হয়। মোট ১২টি বগি দিয়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু আট মাস পরেই অত্যাধুনিক এই বগিগুলো বনলতা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। যার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রাজশাহীর মানুষ।
গত কয়েকদিন ধরেই বনলতার বগি সরিয়ে নেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীর মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সমালোচনা ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পরে গত ২২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, রেলমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। বনলতা ট্রেনের বগি পরিবর্তন করা হবে না। তারপরেও শুক্রবার বনলতার বগি পাঠানো হয়েছে নীলসাগরে।
রাজশাহী স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে শেষবারের মতো ইন্দোনেশিয়ান র্যাক (ট্রেনের সব কোচ মিলে একটি র্যাক) নিয়ে যাত্রা করেছে বনলতা। এরপর ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার র্যাকটি চলে গেছে চিলাহাটি।
শুক্রবার রাতের মধ্যে ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’র ভারতীয় এলএইচবি র্যাকটি বনলতার জন্য রাজশাহীতে পৌঁছায়। আজ শনিবার এই বগি নিয়ে যাত্রা শুরু করবে বনলতা। বগি পরিবর্তনের জন্য বনলতার আসন বাড়বে ২০৭টি। এছাড়াও দুইটি এসি কেবিন কোচ থাকছে বনলতায়। যে সুবিধা আগে বনলতায় ছিল না।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, বনলতার ইন্দোনেশিয়ার বগিগুলো দিয়ে ট্রেনের সিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পরিবর্তন করতে হলো। বনলতায় থাকা ইন্দোনেশিয়ান র্যাকটি কোনোভাবেই সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধুমকেতু এক্সপ্রেসের সঙ্গে খাপ খাচ্ছিল না। কিন্তু এসব ট্রেন দুটি র্যাক দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু বনলতার ওই র্যাকটি সবদিক থেকেই ছিল এগুলোর চেয়ে ভিন্ন।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গিয়ে ইন্দোনেশিয়ান র্যাকটি প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষামান থাকতো। পরদিন ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে আবার সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়তো। বনলতার র্যাকটি এখন অন্যগুলোর মত হওয়ার কারণে এই সময়ে কোনো একটি ট্রেনের সিডিউল হঠাৎ পরিবর্তন হলে সে সময় এই র্যাকটি দিয়ে চালানো হবে।
এছাড়া, প্রয়োজনে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারও এই র্যাকটি কাজে লাগানো যাবে। এখন থেকে তিনটি র্যাকে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলবে চারটি ট্রেন বলে জানান এই রেল কর্মকর্তা।
এআই/