সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনে জাপানী বিনিয়োগের আশাবাদ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৩ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ শনিবার
১১টি শিল্প উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে বেসরকারী খাতে প্রতিষ্ঠিত দেশের বৃহৎ সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনে জাপানী বিনিয়োগের আশাবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। জাপানের বিশ্বখ্যাত কোম্পানীগুলো এখানে ভারী শিল্পসহ কৃষি পণ্য জাত শিল্পখাতে বিনিয়োগের চিন্তা ভাবনা করছে।
শনিবার দুপুরে এই মেগা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে এমন আশার কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইকোনমিক জোন অথারিটি (বেজা) একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি টিম।
এ টিমের প্রধান উপ-সচিব এবং বেজার ম্যানেজার (এমআইডিআই সেল) ও জাপানে বাংলাদেশি দুতাবাসের সাবেক কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাসান আরিফ।
তিনি জানান, উত্তবঙ্গের প্রবেশদ্বার শুধু সিরাজগঞ্জের জন্য নয়, পুরো উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আগামীতে বড় ভুমিকা পালন করবে। এজন্য বেজার সার্বিক সহযোগীতা চলমান আছে এবং আগামীতেও থাকবে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞের সুচারুরুপে সম্পন্ন করতে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। উদ্যোক্তারা সুদূর প্রসারী চিন্তার মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আর এই উন্নয়ন অংশীদারিত্বে জাপানও আমাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে। জাপানের বিশ্বখ্যাত কোম্পানীগুলোর সাথে যোগাযোগ চলছে।
এই ইকোনমিক জোনের অনন্য ভৌগলিক অবস্থার পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সুবিধা যেমন চমৎকার। তেমনি সড়ক, রেল এবং নৌপথ ব্যবহারে যে পরিবেশ রয়েছে এবং আরো পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে তাতে সহসাই বিনিয়োগ কারীরা আকৃষ্ট হবে। এ লক্ষেই জাপানের বিনিয়োগ কারীরা সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। তারা ভারী শিল্প ও কৃষি পন্যজাত শিল্প স্থাপনে উৎসাহ দেখিয়েছে।
এসময় সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক ও জাবির সিনেটর শেখ মনোয়ার হোসেন, প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা মো. শহিদুল ইসলামসহ বেজা এবং ইকোনমিক জোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক ও জাবির সিনেটর শেখ মনোয়ার হোসেন জানান, এই ইকোনমিক জোনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে রেলওয়ের আইসিডি স্থাপন করা হবে। এখানেই কাস্টম কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে রেলের মাধ্যমে উৎপাদিত মালামাল ব্যবহৃত কনটেইনার চট্টগ্রাম, মংলা, পায়রা বন্দরে যাতায়াত করবে বিদেশ সরবরাহে।
এছাড়া ভারতের সেভেন সিষ্টার এবং নেপাল ও ভুটানের সাথে মালামাল পরিবহনে এশিয়ান হাইওয়ের সাথেই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে ওঠায় সড়ক পথেও পন্য পরিবহন সহজ হবে।
তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী ডেলটা প্ল্যানের মাধ্যমে যমুনাসহ সকল নদীকে গভীরতা বাড়িয়ে সচল করার যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে যে নদীবন্দরটি স্থাপন হচ্ছে তা থেকে বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরে সহজেই পণ্য পৌছতে পারবে।
মানুষকে শিকড়চ্যুত না করে ঘরের কাছেই কর্মের সুবিধা সৃষ্টিতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে গড়ে উঠছে বেসরকারী পর্যায়ে দেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় সয়দাবাদ এলাকায় ১ হাজার ৪১ একর অধিগ্রহণকৃত জায়গায় এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে মাটি ভরাটের কাজ।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত সুবিধা পাশাপাশি জল, স্থল এবং রেল পথে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিয়ে আগামী ২ বছরের মধ্যে তা কারখানা করার উপযোগী হলে উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ কর্তৃপক্ষের। ৩ হাজার ২শ কোটি টাকার সবুজায়নের এ মেগা প্রকল্পে ৪শ ভারী শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হলে মাসে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী উৎপাদনের আশাবাদ শিল্প উদ্যোক্তাদের। ইতিমধ্যেই দেশ বিদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য আকৃষ্ট করেছে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন।
কেআই/এসি