চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ড্রেজার দিয়ে বালু লুট, হুকমিতে সেতু-বসতি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:১৮ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলাধীন এনায়েতপুর থানার জালালপুরে সেতুর ১০ গজের মধ্য থেকে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। স্থানীয় চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ ও তার সহযোগীদের উদ্যোগে পাকা রাস্তা ভরাটে এমন কাণ্ডে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা।
এর ফলে সেতু, রাস্তা ও পাশের আবাদী জমি বিলীনের আশংকা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রুপসী বাদল মোড় থেকে জালালপুর পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের কাজ চলছে। বর্তমানে সাব লিজ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সুলতান মাহমুদ ও তার সহযোগী সৈয়দপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মাটি ভরাটের কাজ করছেন।
তারা প্রভাব খাটিয়ে জালালপুর ব্রিজের ১০ গজের মধ্যে থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার লাগিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করছেন। গত ১ সপ্তাহ ধরে এভাবে জোর করে বালু তুলে তারা পাকা রাস্তার মাঝে ভরাট করছেন। এলাকাবাসী বার বার নিষেধ করলেও তারা তোয়াক্কা করছেনা। যাতে হুমকীর মুখে পড়েছে ওই ব্রিজ, আশপাশের আবাদী জমি এবং ঘর-বাড়ি।
এ ব্যাপারে এলাকার সমাজ সেবক মীর জাহাঙ্গীর হোসেন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও বেশ কয়েকজন জানান, দীর্ঘ দিন ধরে চেয়ারম্যান সুলতান হাজীর নেতৃত্বে একটি চক্র এলাকায় সরকারি জায়গা থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। অভিযান চললেও তাদের এই অপকর্ম থামছেনা। হঠাৎ করে গত সপ্তাহ খানেক ধরে তার সহযোগী শহিদুল মাষ্টারকে সঙ্গে নিয়ে জালালপুর ব্রিজের কাছ থেকে ড্রেজার লাগিয়ে বালু তুলছে তারা। তাদের জ্ঞানহীন এমন কর্মকাণ্ডে সবাই হতবাক। প্রভাবশালী বলে আমরা কিছু বলতে পারিনা। আবার কেউ বললেও মানছেন না। আমরা তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যে কোনও সময় ব্রিজটিসহ আমাদের আবাদী জমি ও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়বে।
তবে জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ জানান, মাটি তোলা হচ্ছে। তবে আমি জড়িত নই।
এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে গণ স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। মূল আবেদনকারী হাসেন আলী শেখ জানান, চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ জোর করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি ও আমাদের কৃষি জমি থেকে ২টি ড্রেজার বসিয়ে বালু কাটছে। এতে আমাদের ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের কাছে গত বছরের ২৬ নভেম্বর গণ আবেদন করেও কোনও কাজ হচ্ছেনা। চেয়ারম্যান বলে বেড়াচ্ছে এসব অভিযোগ দিয়ে আমার কিছুই হবেনা।
এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা জানান, ব্রিজের কাছ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলনের বিষয়টি আসলেই হতাশজনক। দ্রুতই ড্রেজার দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এনএস/