বাবার পচাগলা দেহের সঙ্গে একই ঘরে ৫ দিন, অতঃপর
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩২ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার
প্রতীকী ছবি
মৃত বাবার পচাগলা দেহের সঙ্গে একই ঘরে পাঁচ দিন কাটালেন অজিতকুমার ঘোষ নামে বেহালার এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি। বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকতেন তার বড় ভাই অশোককুমার ঘোষ। তবুও ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পাননি তিনি।
বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকালে ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখে হতভম্ভ হয়ে যান। খবর দেন পুলিশকেও। আর সেই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান পর্ণশ্রী থানার পুলিশকর্তারাও। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বেহালায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকার ডঃ এম জি রোডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (৮৫) যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান পাঁচ দিন আগে। বাবার মৃত্যুতে যেন বোবা হয়ে যান তার ছোট ছেলে অজিতকুমার ঘোষ। কাউকে কিছু জানানো তো দূরে থাক, মৃতদেহ ঘরে রেখেই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন অজিত।
এদিকে, ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে অশোককুমার ঘোষ একই পাড়ায় অন্য বাড়িতে থাকেন। এদিন সকালে তিনি নিয়মমাফিক বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান।
অশোককুমার জানান, সে সময়ে বাড়ি ছিলেন না তার ভাই অজিত। বাড়িতে ঢোকা মাত্রই পচা গন্ধ পেয়ে সন্দেহ হয় তার। ঘরে ঢুকে দেখেন, বাবার পচাগলা দেহ পড়ে আছে। স্তম্ভিত অবস্থায় তিনি পর্ণশ্রী থানার পুলিশকে ফোনে সব জানান। পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অজিতকুমার মানসিকভাবে সুস্থ নন। তাদের অনুমান, বাবাকে হারাতে চাননি তিনি। তাই তার মৃতদেহ ঘরে রেখে দিয়েছিলেন অজিত। তিনি তেমন কিছু করতেনও না। অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি কর্মী বাবার সঞ্চয়েই চলত দু’জনের সংসার।
অজিতকুমারের এ কাণ্ড মনে করিয়ে দিচ্ছে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের পার্থ দে-র ঘটনা। ২০১৫ সালের ১০ জুন। রবিনসন স্ট্রিটের একটি বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৭৭ বছরের এক ব্যক্তির অগ্নিদগ্ধ দেহ।
সেই বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, মৃত ব্যক্তির ছেলে তার বড় বোনের কঙ্কালের সঙ্গে মাসের পর মাস ওই বাড়িতে ছিলেন। দিদির কঙ্কালকে খেতেও দিতেন ভাই— পার্থ দে। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান পার্থ।
এনএস/